মাসুম হেলাল ::
সুনামগঞ্জে দলীয় প্রতীকে দ্বিতীয় দফায় অনুষ্ঠেয় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতার লক্ষ্যে মাঠে আছেন ক্ষমতাসীন দলের অনেক মনোনয়নপ্রত্যাশী। দলীয় মনোনয়ন না পেলেও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়াবেন না মনোনয়নবঞ্চিতদের একটি বড় অংশ। এমন পরিস্থিতিতে জেলার প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থীর মুখোমুখি হতে পারেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী, যার সুবিধা নেবেন বিরোধীদলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীকের বিধানে আগামী ১১ এপ্রিল থেকে ধাপে ধাপে অনুষ্ঠিত জেলার ৮৭টি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ শুরু হবে। দীর্ঘ ৫ বছর ধরে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে মাঠে আছেন ক্ষমতাসীন দলের অনেকে। জেলা, উপজেলায় রাজনৈতিক মতবিরোধের জেরে অনেকের পারস্পরিক অবস্থান বিপরীত মেরুতে থাকায় কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। স্থানীয় রাজনীতিতে আধিপত্য বজায় রাখতে প্রার্থী হবে ‘একই গুরুর শিষ্য’ এমন অনেক নেতা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যা গড়ে ৪ জন করে মোট ৩৬ জন। দলীয় মনোনয়ন না পেলেও প্রতিপক্ষকে ছাড় না দিয়ে ‘আগামীর রাজনীতির স্বার্থে’ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তাদের অনেকে। উপজেলার দোহালিয়া ইউনিয়নে আসছে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে মাঠে আছেন চার নেতা। এই চারজনের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শামীমুল ইসলাম শামীম ও আহ্বায়ক কমিটির সদস্য বর্তমান চেয়ারম্যান আনোয়ার মিয়া আনু। শামীম ছাতক পৌর মেয়র কালাম বলয়ের, আর আনুর রাজনৈতিক গুরু সংসদ সদস্য মুহিবুুর রহমান মানিক। বিগত নির্বাচনে মনোনয়নবঞ্চিত শামীম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করে পরাজিত হন আনুর কাছে। আসছে নির্বাচনে একে অন্যকে ছাড় দেবেন না বলে জানান তাদের সমর্থকরা। সেইসাথে এবার ভোটের মাঠে যুক্ত হয়েছেন এমপি মানিকের অপর আস্থাভাজন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নূর মিয়া। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাকও।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন মনোনয়ন প্রত্যাশী জানান, মানুষের সেবার জন্য রাজনীতি করি, ফলে জনপ্রতিনিধি হলে সেই কাজটা সহজ হয়। আমি দলীয় মনোনয়ন চাইব- আশা করি পাবও। কিন্তু না পেলে আমার কর্মী-সমর্থক ও এলাকাবাসীর স্বার্থে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে আসার কোনও সুযোগ নেই।
নেতাকর্মীরা জানান, দলীয় কোন্দলের জেরে রেষারেষি, আঞ্চলিকতা ও রাজনৈতিক আধিপত্যের জেরে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর বিপরীতে আরও কমপক্ষে দুইজন বিদ্রোহী প্রার্থী থাকবেন। আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী মাঠে থাকলে সেটার সুযোগ বিরোধীপক্ষ কাজে লাগাবে বলে মনে করেন তারা।
সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ মতিউর রহমান বলেন, আসছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জেলার প্রতিটি ইউনিয়নে একক প্রার্থী দেওয়ার ব্যাপারে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তারপরও দলের যেসব নেতা নৌকার বিরুদ্ধে গিয়ে নির্বাচনে প্রার্থী হবেন, তাদের বিরুদ্ধে দলীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা অবশ্যই গ্রহণ করা হবে।