1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০১:২১ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

৬ মাসে কোটিপতি আমানতকারী বেড়েছে ৪ হাজার ৮৬৩

  • আপডেট সময় শনিবার, ৯ জানুয়ারী, ২০২১

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
২০২০ সালের মার্চে যখন দেশে মহামারি করোনার আবির্ভাব শুরু হয়, তখন ব্যাংকে কোটি টাকার বেশি আমানত রাখা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল ৮২ হাজার ৬২৫টি। গত সেপ্টেম্বরের শেষে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৭ হাজার ৪৮৮টি। অর্থাৎ, ছয় মাসে (১ এপ্রিল থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর) ব্যাংক খাতে কোটি টাকা আমানত রাখা অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বেড়েছে ৪ হাজার ৮৬৩টি। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, ৮৭ হাজার ৪৮৮টির মধ্যে ব্যক্তি অ্যাকাউন্ট যেমন রয়েছে, তেমনই প্রাতিষ্ঠানিক অ্যাকাউন্টও রয়েছে। আর প্রতিটি প্রাতিষ্ঠানিক অ্যাকাউন্টের পেছনে কোনও না কোনও ব্যক্তি রয়েছেন। তারা বলছেন, ব্যাংকে কোটি টাকার বেশি আছে- এমন আমানতের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া মানেই দেশে নতুন করে কোটিপতির সংখ্যা বেড়ে গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদও মনে করেন, ব্যাংকে কোটি টাকার আমানতের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া মানেই দেশে নতুন করে কোটিপতির সংখ্যা বেড়ে গেছে। তিনি বলেন, নামে অথবা প্রতিষ্ঠানের নামে কোটি টাকার ওপরে আমানত রাখা অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বাড়া মানেই কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়া। যুক্তরাষ্ট্রের স¤পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়েলথ-এক্সের প্রতিবেদনের সূত্র ধরে তিনি উল্লেখ করেন, অতি ধনী বৃদ্ধির হারের দিক থেকে বাংলাদেশ চীন ও যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলে যাচ্ছে। তার মতে, বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবেও এমন চিত্রই উঠে এসেছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে স¤পদশালী বৃদ্ধির হার ও ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রক্ষেপণ ধরে ওয়েলথ-এক্স এর প্রতিবেদনে বলা ছিল, ৩ কোটি ডলার বা আড়াইশ’ কোটি টাকার বেশি স¤পদের মালিকদের সংখ্যা বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি হারে বাড়ছে। ওয়েলথ-এক্সের হিসাবে, ২০১৭ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে বাংলাদেশে অতি ধনীর সংখ্যা বেড়েছে গড়ে ১৭ শতাংশ হারে। এ হার যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান, ভারতসহ মোট ৭৫টি বড় অর্থনীতির দেশের চেয়ে বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জুন থেকে সেপ্টেম্বর – এই তিন মাসে ব্যাংকে কোটিপতি আমানতের সংখ্যা বেড়েছে ১ হাজার ৪৫১টি। আর গত মার্চ থেকে জুন ওই তিন মাসে ব্যাংকে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা বেড়েছে ৩ হাজার ৪১২ জন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, এই বছরের জুন মাস শেষে ব্যাংক খাতে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা ছিল ৮৬ হাজার ৩৭ জন। গত মার্চ শেষে এই সংখ্যা ছিল ৮২ হাজার ৬২৫ জন।
এদিকে সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) করোনাকালীন আয়, ব্যয় ও বেকারত্বের প্রভাব তুলে ধরে বলেছে, করোনায় মানুষের আয় কমেছে ২০ শতাংশ। করোনার আগে গত মার্চ মাসে প্রতি পরিবারের মাসিক গড় আয় ছিল ১৯ হাজার ৪২৫ টাকা। আগস্টে তা কমে দাঁড়ায় ১৫ হাজার ৪৯২ টাকায়। অর্থাৎ পাঁচ মাসের ব্যবধানে পরিবারপ্রতি আয় কমেছে প্রায় চার হাজার টাকা। আর জাতিসংঘের ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশনের সহযোগিতায় প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ আয়োজিত এক ওয়েবিনারে জানানো হয়, কোভিড-১৯-এর কারণে আয় কমেছে শতকরা ৭২ দশমিক ৬ শতাংশ পরিবারের। সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে সেসব পরিবার, যাদের বছরে আয় এক লাখ টাকার কম।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত এক বছরে কোটিপতি আমানতকারী বেড়েছে ৭ হাজার ৭১১ জন। এরমধ্যে করোনাকালের ছয় মাসেই বেড়েছে ৪ হাজার ৮৬৩। ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা ছিল ৭৯ হাজার ৮৭৭ জন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, বিগত ১২ বছর ধরে কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে। ২০০৯ সালের জুন মাস শেষে ব্যাংক খাতে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা ছিল ২১ হাজার ৪৯২ জন। এখন এই সংখ্যা ৮৭ হাজার ৪৮৮ জন। অর্থাৎ গত ১২ বছরে ৬৫ হাজার ৯৯৬ ব্যাংকের গ্রাহক কোটিপতির তালিকায় নতুন করে নাম লিখিয়েছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে জানা যায়, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরের শেষে ব্যাংকে ৫০ কোটি টাকার বেশি আমানত রাখা ব্যক্তি রয়েছেন এক হাজার ৩০৩ জন। ৪০ কোটি টাকার বেশি আমানত রাখা ব্যক্তি রয়েছেন ৪৭২ জন। ৩৫ কোটি টাকার বেশি আমানত রেখেছেন ২৬৮ জন গ্রাহক। ৩০ কোটি টাকারও বেশি আমানত রেখেছেন ৩৫২ জন। ২৫ কোটি টাকার বেশি আমানত রেখেছেন ৬২৬ জন। ২০ কোটি টাকার বেশি আমানত রেখেছেন ১০৪০ জন। ১৫ কোটি টাকার বেশি আমানত রেখেছেন ১ হাজার ৫৭১ জন। ১০ কোটি টাকার বেশি আমানত রেখেছেন ৩ হাজার ২৩২ জন। পাঁচ কোটি টাকার বেশি আমানত রেখেছেন ৯ হাজার ৬৯৯ জন। এক কোটি থেকে ৫ কোটি টাকা আমানত রাখা গ্রাহকের সংখ্যা ৬৮ হাজার ৯২৫ জন গ্রাহক।
এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ১৯৭২ সালে দেশে কোটিপতি ছিলেন মাত্র পাঁচ জন। ১৯৭৫ সালের ডিসেম্বরে এই সংখ্যা বেড়ে ৪৭ জনে দাঁড়ায়। ১৯৮০ সালে এ সংখ্যা দাঁড়ায় ৯৮ জনে। এরশাদ সরকারের পতনের সময় ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে কোটিপতির সংখ্যা ছিল ৯৪৩ জন। ১৯৯৬ সালের জুনে কোটিপতি ছিলেন দুই হাজার ৫৯৪ জন। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর শেষে এ সংখ্যা দাঁড়ায় পাঁচ হাজার ১৬২ জনে। ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে কোটিপতির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৮ হাজার ৮৮৭ জনে। ২০০৮ সালে ব্যাংক খাতে কোটিপতি আমানতকারী গ্রাহক ছিলেন ১৯ হাজার ১৬৩ জন।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com