স্টাফ রিপোর্টার ::
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী মুজিববর্ষে ‘হাওরপাড়ে শিশুর পাঠে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ’ শীর্ষক একটি ব্যতিক্রমী কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন। শিক্ষাসহ জীবনমানের নানা সূচকে পিছিয়ে থাকা হাওর এলাকার ১০০ টি বিদ্যালয়ের শিশুদের মাঝে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সুখপাঠ্য বই বিতরণ করা হবে মুজিববর্ষে।
ইতোমধ্যে শাল্লা উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়নের নারকিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫৮ জন শিক্ষার্থীর মাঝে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ এবং জাতির সংগ্রামের ইতিহাস নিয়ে রচিত বই উপহার দেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ। এ সময় জেলা প্রশাসকের স্ত্রী নাহিদ আফরোজ সুলতানা শিক্ষার্থীদের মুজিববর্ষের লোগো খচিত একটি করে সুদৃশ্য স্কুলব্যাগ উপহার দেন।
জেলা প্রশাসক শিক্ষার্থী ও এলাকার বয়োজ্যেষ্ঠদের সাথে কথা বলেন। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে বিদ্যালয়টিতে বর্ষাকালে শিশুদের যাতায়াতের সুবিধার্থে একটি নৌযান প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেন।
মুজিববর্ষে হাওরের বিদ্যালয়ের শিশুদের মাঝে বই বিতরণের উদ্দেশ্যে শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর) জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ শাল্লা উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়নের নারকিলা গ্রামে নারকিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গমন করেন। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ এই সময় এই বিদ্যালয়ের ৫৮ জন শিক্ষার্থীদের বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ এবং জাতির সংগ্রামের ইতিহাসের উপর বই উপহার প্রদান করেন। একই সময়ে জেলা প্রশাসকের সহধর্মীণি নাহিদ আফরোজ সুলতানা হাওরের শিশুদের জন্য মুজিববর্ষের লোগোসহ একটি করে সুদৃশ্য স্কুলব্যাগ প্রদান করেন। জেলা প্রশাসক নিজে বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেন এবং তাদেরকে খাইয়ে দেন। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম এবং তার সহধর্মীনি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এবং সহধর্মীনি, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (শাল্লা, বিশ্বম্ভরপুর এবং সদর), সহকারী কমিশনার ভূমি (সুনামগঞ্জ সদর) এবং অন্যান্য সহকারী কমিশনারবৃন্দ।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিশু এবং এলাকার বয়জ্যেষ্ঠদের সাথে কথা বলেন, তাদের বিভিন্ন অভাব ও অনুযোগের কথা শোনেন। তাদের প্রয়োজনের ভিত্তিতে তিনি বিদ্যালয়টিতে বর্ষাকালে শিশুদের যাতায়াতের সুবিধার্থে অচিরেই একটি নৌযান প্রদানের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন। এছাড়া বিদ্যালয়ের সংলগ্ন নৌকা ঘাট উন্নয়ন, নিকটস্থ মসজিদের উন্নয়ন কাজের আশ্বাস প্রদান করেন। উল্লেখ্য যে, ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসেও জেলা প্রশাসক, স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ একই বিদ্যালয়ে পরিদর্শন করেছিলেন। তখন এই বিদ্যালয়টিতে বিদ্যুৎ সংযোগ, টিউবওয়েল- কোনো কিছুই ছিল না। জেলা প্রশাসক তখন দ্রুত এগুলো বাস্তবায়নের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেন এবং সহযোগী সরকারি দপ্তর সমূহের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান ও টিউবওয়েল স্থাপন করেন। হাওরের শিশুরা এরকম একটি দিন পার করতে পেতে খুবই আনন্দিত হয়। সুনামগঞ্জের বিভিন্ন প্রত্যন্ত বিদ্যালয়ে বই বিতরণের এই উদ্যোগের মাধ্যমে শিশুদের জাতীয় চেতনা উজ্জীবনের কার্যক্রম চলমান থাকবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ।