1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৮:১০ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

শাল্লায় হচ্ছে ‘বীরমাতা পল্লী’

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০

বিশেষ প্রতিনিধি ::
১৯৭১ সনের ৪ ডিসেম্বর ভোররাতে দিরাই-শাল্লা এলাকার পেরুয়া, দাউদপুর, উজানগাঁও, শ্যামারচরসহ কয়েকটি গ্রামে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল প্রশিক্ষিত রাজাকার বাহিনী। একসঙ্গে একাধিক গ্রামে প্রায় সাড়ে তিনশ প্রশিক্ষিত রাজাকার গ্রামগুলোতে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, নারীনির্যাতন ও গণহত্যায় মেতে ওঠে। একাত্তরের নির্যাতিত পরিবারগুলো এখনো অসহায় ও মানবেতরভাবে জীবনযাপন করছেন। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত সেই গ্রামগুলোর নির্যাতিত নারীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে ‘বীরমাতা পল্লী’ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই পল্লীতে এলাকার হতদরিদ্র তালিকাভুক্ত বীরাঙ্গনা, স্বীকৃতির বাইরে থাকা বীরাঙ্গনা, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধ মামলার বাদি, সাক্ষীসহ মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত ২০টি অসহায় পরিবারকে স্থান দেওয়া হবে। সরকারি মালিকানাধীন খাস ভূমিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের মাধ্যমে এই বীরমাতা পল্লী নির্মিত হবে। মঙ্গলবার দুপুরে শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মুক্তাদীর হোসেন প্রকল্পস্থল পরিদর্শন করেছেন। এসময় তিনি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সঙ্গেও এসব বিষয়ে কথা বলেন এবং তাদের পরামর্শ গ্রহণ করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ এই পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। ‘বীরমাতা পল্লী’ নাম দিয়ে শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়কে প্রস্তাব পাঠাতে বলেন। গত বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে স্থানীয়ভাবে প্রকল্প প্রস্তাবটি উপজেলা থেকে অনুমোদন করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। আগামী সপ্তাহে জেলা প্রশাসক সেখানে যাবেন।
জানা গেছে, শাল্লা উপজেলার দাউদপুর ভূমি অফিস সংলগ্ন সরকারি খাস ভূমিতে বীর মাতা পল্লীটি প্রতিষ্ঠা করা হবে। এখানে ২০টি পরিবারকে ৫ শতক ভূমিসহ পাকা বাড়ি করে দেওয়া হবে। যেখানে মসজিদ, মন্দির, পুকুর, মাঠ, কমিউনিটি সেন্টারও থাকবে। আড়াই একর জমিতে গড়ে ওঠা বীরমাতা পল্লীটি হবে মুক্তিযুদ্ধের অম্লান স্মৃতিরক্ষার এক অনন্য উদ্যোগ। প্রশাসনের প্রস্তাবিত এই প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা শুনে একাত্তরের নির্যাতিত অসহায় নারীরা আশার আলো দেখছেন। তবে এই এলাকায় একাত্তরের গণহত্যার নায়ক দালাল আব্দুল খালেকের আত্মীয়রা রাজনীতি ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে থাকায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিরক্ষার অনন্য এই উদ্যোগ যাতে বাস্তবায়িত না হয় নানাভাবে চেষ্টা শুরু করে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
দাউদপুরের বীরাঙ্গনা কুলসুম বিবি বলেন, ১৯৭১ সনে রেজাকাররা আমাদের ধইরা নিয়া গিয়া ক্যাম্পে নির্যাতন করছিল। আমরার অনেক বইন এখনো স্বীকৃতি পায় নাই। তাদের থাকার ঘর নাই, বাড়ি নাই। তারার লাগি ডিসি সাব গুচ্ছগাও বানাইবার যে উদ্যোগ নিছইন আমরা খবর পাইয়া খুউব খুশি অইছি। তাড়াতাড়ি এইটা অউক।
মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক অমরচাঁন দাস বলেন, এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে মুক্তিযুদ্ধের এক অনন্য স্মৃতিরক্ষার উদ্যোগ হবে এটি। কারণ একাত্তরে এই এলাকার নাম নিশানা মুছে দিতে একসঙ্গে প্রশিক্ষিত রাজাকার বাহিনী গ্রামগুলোতে হামলা করেছিল। নারীদের ধরে নিয়ে গিয়েছিল। লুটপাট ও অগ্নিসংযোগে নরক বানিয়েছিল এলাকা। এখনো নির্যাতিত পরিবারগুলোর মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। এই উদ্যোগের ফলে তারা উপকৃত হবে। তাদের পাশে দাঁড়ানো রাষ্ট্রের দায়িত্ব।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, ইতোমধ্যে স্থানীয় প্রস্তাব আমরা পেয়েছি। অনন্য এই প্রস্তাবটি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিপুল সাড়া পেয়েছি। আমরা এই কাজটি বাস্তবায়িত করতে পারলে মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিরক্ষার পাশাপাশি একাত্তরে নির্যাতিত পরিবারগুলোও মাথা গোঁজার ঠাঁই পাবে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com