:: এড. আনোয়ার হোসেন ::
মঙ্গলবার রাতে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, তখন রাত আনুমানিক ১২:০৫ ঘটিকা হবে। হঠাৎ মোবাইলের রিংটোন বেজে উঠল, দেখি ছাতকের এডভোকেট আব্দুস সালাম কল দিয়েছে। এতো রাতে কল দেওয়ায়, অজানা শঙ্কা নিয়েই আমি ফোন ধরি। এড. আব্দুস সালাম জানায়, জামালগঞ্জের এডভোকেট জুবায়ের মারা গেছে। সংবাদটি শুনে আমার মাথা ঝিম ঝিম করতে লাগলো। এড. আব্দুস সালাম আরো জানায়, এডভোকেট আইন উদ্দিন তাকে আমার নিকট হইতে এড. জুবায়েরের মৃত্যুর সংবাদের সত্যতা জানানোর জন্য বলে। আমি তাৎক্ষণিক এডভোকেট জোহাকে কল দিলাম, এড. জোহা জানায়, সে এই বিষয়ে কিছু জানে না। কল দিই এড. হিমেলকে, এড. জমিরকে, কেউই কিছু জানে না বলে জানায়। পরে ফোন দেই আমাদের সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বদর উদ্দিন ভাইকে। এড. বদর উদ্দিন ভাই আমাকে জানান, জামালগঞ্জের এড. জুবায়ের আহমদ মারা গেছেন। তখন সকলকেই ফোনে বিষয়টি জানাই। ইতিমধ্যে ফেইসবুকেও এড. জুবায়ের আহমদের মৃত্যুর বিষয়টি প্রকাশ পেয়ে যায়। স্মৃতির পাতায় ভেসে উঠে এড. জুবায়ের আহমদের মুখ খানি। সহজ, সরল ও অমায়িক একজন আইনজীবী ছিল। সে আদালত প্রাঙ্গণে আমার জানা মতে কারো সাথেই কখনো দুর্ব্যবহার করেনি। সবসময় তার মুখে হাসি থাকতো, সে অত্যন্ত মার্জিত ও রুচিবান মানুষ ছিল।
করোনার লকডাউনের পূর্বে আদালত প্রাঙ্গণে তার সাথে আমার শেষ দেখা হয়। সে কয়েকবার অসুস্থ ছিল। ঢাকায় ও সিলেটে চিকিৎসা গ্রহণ করেছে। বেশি দিন হয়নি তার একভাই ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছিল। এ জন্য সে খুব মর্মাহত ছিল। এ বিষয়েও তার সাথে আমি কথা বলি। সারা বিশ্ব যখন করোনার ভয়ে ভীত, তখন এড. জুবায়েরে চলে যাওয়ায় খুবই মর্মাহত হয়েছি। সবাইকে একদিন মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু কিছু মৃত্যু মনে নাড়া দেয়, মনে দাগ কাটে। খুব অসময়ে এড. জুবায়ের আহমদ আমাদেরকে ছেড়ে, এই নশ্বর দুনিয়া ছেড়ে চলে গেল। আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাত দান করবে – এই প্রত্যাশা।
[লেখক আনোয়ার হোসেন, আইনজীবী ও সাংবাদিক]