স্টাফ রিপোর্টার ::
‘করোনা সন্দেহে মাকে ঘর থেকে বের করে দিল সন্তানরা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর শাল্লা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ খাদ্যসামগ্রী পাঠানোর পর সেই বৃদ্ধা মাকে দেখে আসলেন শাল্লা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.আল মুক্তাদির হোসেন।
বুধবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে শাল্লা উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়নের নিয়ামতপুর গ্রামের গিয়ে সেই বৃদ্ধা মা অমত্য বালা দাশকে দেখে আসেন তিনি। এসময় তিনি ছেলেদের কঠোরভাবে নির্দেশনা প্রদান করে এমন ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়। পাশাপাশি বৃদ্ধা মায়ের যে কোনো প্রয়োজনে সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন তিনি।
গত মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) সকালে দৈনিক সুনামকণ্ঠের শাল্লা উপজেলা প্রতিনিধি জয়ন্ত সেন তার ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রচার করলে বিষয়টি ভাইরাল হয়ে যায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শাল্লা উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়নের নিয়ামতপুর গ্রামের বাসিন্দা বৃদ্ধা অমত্য বালা দাস। দুই ছেলের জন্মের পর স্বামীকে হারান তিনি। দুই ছেলে যোগেশ দাশ ও রণধীর দাশকে কষ্ট করে মানুষ করেন। দুই ছেলে কৃষি কাজ করলেও তাদের পারিবারিক অবস্থা ভালো। দেশের অন্য জেলা থেকে শাল্লায় আসা গার্মেন্টস কর্মীর বাড়িতে যাওয়ায় মাকে ঘর থেকে বের করে দিয়েছেন দুই ছেলে।
গত মঙ্গলবার শাল্লা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ওই মায়ের জন্য খাবার পাঠান এবং ছেলেদের সতর্ক করে দেন। তারপর আজ বুধবার সকালে ওই বৃদ্ধ মায়ের বাড়িতে উনাকে সব ধরনের
সাহায্য সহযোগিতার আশ্বাস দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল-মুক্তাদির হোসেন বলেন, আমি উনার সাথে দেখা করে এসেছি। উনি এখন ভালোই আছেন ছেলেদের বাড়িতে রয়েছেন। আমি ছেলেদের সতর্ক করে দিয়েছি। আমরা এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হোক সেটা চাইবো না।
তিনি আরো বলেন, ওই নারী ভারসাম্যহীন না। তিনি সুস্থ আছেন। বয়সের ভারে একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। সেটা আমরা মিমাংসা করে দিয়েছি। তাছাড়া উনার কোন রকমের চিকিৎসার প্রয়োজন হলেও আমরা তাকে সহযোগিতা করবো।
এছাড়া মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) বিকেলে হবিবপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সদস্য সুব্রত সরকার নিয়ামতপুর গ্রামে বৃদ্ধার বাড়িতে যান এবং ১০ কেজি চাল, ২ কেজি ডাল, ৪ কেজি আলু, ১ কেজি চিড়া, ২টি সাবান, ২টি মাস্ক ও ২৫০ গ্রাম গুড় প্রদান করেন।
এ সময় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের নির্দেশনানুযায়ী ইউপি সদস্য বৃদ্ধার ছেলেদের কঠোরভাবে নির্দেশনা প্রদান করেন যেন এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়। এরপর ছোট ছেলে রণধীর দাস তার ঘরে মায়ের থাকার জায়গা করে দেন।
হবিবপুর ইউনিয়নের সদস্য সুব্রত সরকার বলেন, চেয়ারম্যান মহোদয়ের খাবার নিয়ে আমি বৃদ্ধা মায়ের বাড়িতে গিয়েছি এবং তার ছোট ছেলের বাড়িতে গ্রামবাসীর সম্মতি অনুযায়ী তাকে রেখে এসেছি। আমি বৃদ্ধা মাকে বলে এসেছি- আপনার ছেলেরা খাবার না দিলে আপনার আরেক ছেলে আছে। আপনি আমাকে বলবেন, আমি খাবার নিয়ে আসব আপনার বাড়িতে।