এতদিন ভিন্নদেশের বিষয় ছিল। মানুষ মারা যাচ্ছিল। মৃত্যুর মিছিল বড় হচ্ছিল। মৃত্যুর কান্নার শব্দ শুনা যাচ্ছিল না। কান্না দূরদেশে ছিল। ইউরোপ-আমেরিকার মানুষ মারা যাচ্ছিলেন। যাদের আমরা চিনতাম না। আমাদের তেমন প্রতিক্রিয়া ছিল না। তারপর প্রবাসে থাকা স্বজনদের মৃত্যু সংবাদ আসলো। কিছুটা ব্যথিত হলাম। বারবার বলা হল ঘরে থাকুন। সতর্ক হোন। আমরা গুরুত্ব দেইনি। পুলিশ নামলো। সেনাবাহিনী নামলো। প্রশাসন বলল। জনপ্রতিনিধিরা বলল। আমরা ঘরে থাকতে চাইলাম না। পোষাক শ্রমিকদের জনস্রোত ঢাকায় আনা হল। জীবনের চেয়ে জীবিকায় বাধ্য করালেন পুঁজির প্রভুরা। অন্যদিকে স্বেচ্ছায় ঘরে থাকতে ইচ্ছুক ছিলাম না আমরা।
গতকাল থেকে দেখছি ভিন্ন অবস্থা। ঘাড়ের কাছে করোনা শ্বাস ফেলছে। মহল্লায় মহল্লায় চেনা মানুষ আক্রান্ত হতে দেখেছেন। এখন ভয়ের সুর দেখা যাচ্ছে। সংকট দৃশ্যমান হয়েছে। সেনাবাহিনীকে তাই বলতে হয়নি। ঢাকায়ও সড়ক শূন্য। সুনামগঞ্জ ট্রাফিক পয়েন্ট, পুরাতন বাসস্ট্যান্ডও জনশূন্য। গতসন্ধ্যার পর সিলেট আম্বরখানাও শূন্য। নিজ দায়িত্বে সড়ক থেকে ঘরে ফিরেছেন। বিলম্বে হলেও ভাল। ঘরেই থাকুন। চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম। প্রতিরোধের জন্য ঘরে থাকুন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। ভয় নয়। শিশুরা, বৃদ্ধরা যেন ভয় না পান। জীবনে সংকট থাকবে। সচেতনতা দিয়েই সংকট থেকে বের হয়ে আসতে হবে। মনের জোর বাড়ান। হতাশায় নয়, আশায় থাকুন। আলোকিত ভোর কাছেই। কবীর সুমনের কণ্ঠে কণ্ঠ মেলান- “হাল ছেড়ো না বন্ধু, বরং কণ্ঠ ছাড়ো জোরে / দেখা হবে তোমায় আমায় অন্য গানের ভোরে, / ছেড়েছ তো অনেক কিছুই, পুরনো সেই হাসি, / সকাল বিকেল জানিয়ে দেয়া তোমায় ভালবাসি।”
[অ্যাড. পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ, সংসদ সদস্য, সুনামগঞ্জ-৪]