1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:১২ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান নির্বাচন প্রসঙ্গে একটি প্রস্তাবনা : সৈয়দ মহিবুল ইসলাম

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০২০

৫ জানুয়ারি ২০২০ জনতার বাঁধ ভাঙ্গা জোয়ার নেমে এসেছিল সুনামগঞ্জ শহরে। এক অনাবিল আনন্দের জোয়ারে ভেসে ছিল হাওর অধ্যুষিত সুনামগঞ্জ জেলাবাসী। সুনামগঞ্জে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সংবাদে এই আনন্দযজ্ঞ। বিভিন্ন উপজেলা, থানা সদর, প্রত্যন্ত গ্রাম ও সদর থেকে আগত মানুষের ঢলে আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু হয়েছিল জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে এবং শোভাযাত্রার শেষে জেলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হল বিশাল জনসমাবেশ। প্রধান অতিথি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী জনাব এম. এ. মান্নান এম.পি. ঘোষণা করলেন- এ বছরই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে। বহু দিনের এক বঞ্চিত জনপদের খুশির জোয়ারের নায়ক বিমান দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়া একমাত্র যাত্রী ও এই জেলার সর্ব জনপ্রিয় নেতা এম. এ. মান্নান এম.পি.।
৩০/১২/২০১৯ সোমবার সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় খসড়া আইন মন্ত্রিপরিষদের সভায় নীতিগত অনুমোদন পায়। এর আগে ২০১৬ সালের ৪ অক্টোবর একনেক সভায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবি অনুমোদন পায়-যা উত্থাপন করেছিলেন তৎকালীন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম.এ. মান্নান এম.পি.। সভায় উপস্থিত তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ এই দাবির প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করেন। হাওরাঞ্চলের জনগণের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীরও রয়েছে বিশেষ উদ্যোগ। সুনামগঞ্জবাসী আশা পোষণ করে আছেন যে, দীর্ঘদিনের দুঃখ ও বঞ্চনার অবসান হবে। এই অবহেলিত জনপদের দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাবে।
আশা করা যায় ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত সংসদ অধিবেশনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আইনটি চূড়ান্তভাবে অনুমোদিত হবে। ধাপে ধাপে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পরে যে প্রশ্নটি সকলের মনে উঁকি দেয় তা হল এর স্থান নির্বাচন।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান নির্বাচন নিয়ে অনেক মতবিরোধ তৈরি হয়েছিল। দুর্ভাগ্যবশত অনেক সিলেট এলাকার এম.পি মহান জাতীয় সংসদে বিরোধিতায় লিপ্ত হয়েছিলেন। সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান নির্বাচনে আশা করি সুধীমহল এক মত হবেন।
সুনামগঞ্জ ছিল জলাশয় আর পুকুরে ভরা শহর। অবশ্য অনেক জলাশয় এখন ভরাট হয়েছে। তবে নান্দনিক স্থাপত্যের সৌন্দর্য্যমণ্ডিত ভবন এই শহরে নাই বললেই চলে। আশা করা যায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে নজরকাড়া স্থাপত্যরীতির সুদৃশ্য ভবন তৈরি হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান নিয়ে সবিনয়ে আমি একটি প্রস্তাব উত্থাপন করতে চাই। শহর সংলগ্ন বিস্তীর্ণ জাওয়ার হাওরে অনেক সরকারি ভূমি পড়ে আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গা অধিগ্রহণ করতে সরকারের অনেক অর্থ ব্যয় হয়। সরকারি ভূমি অধিগ্রহণ করলে অনেক অর্থের সাশ্রয় হবে। জাওয়ার হাওরে রসুলপুর মৌজায় প্রায় ৭৫ একর ভূমি খাস জমি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত আছে। শহর সংলগ্ন স্থানে বিশ্ববিদ্যালয় হলে জনজীবনে চাঞ্চল্য ফিরে আসবে। প্রয়োজনীয় আবাসিক ভবন ও হল নির্মাণের জন্য প্রায় পতিত অবস্থায় পড়ে আছে ব্যক্তিমালিকানাধীন আরো ৫০/৬০ একর জমি যা প্রয়োজনে সরকার অধিগ্রহণ করতে পারে। আব্দুজ জহুর ব্রিজ কাছাকাছি হওয়ায় বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, ধর্মপাশা উপজেলার সাথে সংযোগ স্থাপন সহজ হবে। দিরাই, জগন্নাথপুর, ছাতক উপজেলা থেকেও মহাসড়কের মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা করা যাবে। পার্শ্ববর্তী সিলেট জেলা ও মহাসড়কের মাধ্যমে যুক্ত আছে। এমন কি ময়মনসিংহ-সুনামগঞ্জ মহাসড়ক হলে যা একনেক কর্তৃক অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয় যুক্ত থাকবে পুরো হাওরাঞ্চলের সাথে।
রামসার সাইট টাঙ্গুয়ার হাওর, শিমুল বাগান, নিলাদ্রী লেক সহ বিভিন্ন পর্যটন যোগ্য প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান এই জেলায় থাকার সুবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয় নির্বাচনেও স্থানীয় প্রতিবেশ প্রাধান্য পাবে বলে অনুমান করা যায়। টাঙ্গুয়ার হাওরের জীববৈচিত্র্য, হাওরের বুকে বিশাল মৎস্য সম্পদ, কৃষি বিপণন প্রভৃতি বিষয়ে মানবসম্পদ গড়ে তোলার চিন্তা-ভাবনা করা হবে এটি আশা করা যায়।
মরমি কবি হাসন রাজা, বৈষ্ণবকবি রাধারমণ দত্ত, জনপ্রিয় লোক কবি শাহ্ আব্দুল করিম, আধ্যাত্মিক সাধক কবি সৈয়দ শাহনূর, লোককবি দুর্বিণ শাহ্ সহ অসংখ্য কবিদের সৃষ্ট আধ্যাত্মিক ভাব সম্পদ এই অঞ্চলের গর্ব। মাটি ও মানুষের গান গবেষকদের গবেষণার মাধ্যমে বিশ্ব সভায় উপস্থাপিত হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে হলে জ্ঞানভিত্তিক ও মেধানির্ভর সমাজ নির্মাণের দিকে এগিয়ে যেতে হবে এবং বাড়াতে হবে গবেষণা ও উন্নত মানবসম্পদ। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর অন্যতম নিয়ামক হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
[লেখক: সাবেক অধ্যক্ষ, শিক্ষাবিদ ও কলামিস্ট।]

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com