শহীদনূর আহমেদ ::
সুনামগঞ্জের ১১ উপজেলায় হাওরের বোরো ফসলের সুরক্ষায় চলমান বাঁধ নির্মাণকাজে গত বছরের চেয়ে অধিক প্রকল্প গ্রহণ, অক্ষত বাঁধে পুনরায় অধিক বরাদ্দ, পিআইসি গঠনে নীতিমালা না মানা, ক্ষতিগ্রস্ত ও অরক্ষিত স্থানে প্রকল্প গ্রহণ না করাসহ বাঁধ নির্মাণ কাজে নানা অনিয়মে উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে হাওর বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটি। বুধবার সংগঠনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. বজলুল মজিদ চৌধুরী খসরু ও সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায় স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ করছি ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে হাওরের বোরো ফসল রক্ষায় বাঁধ নির্মাণকাজে চরম অব্যবস্থাপনা ও লুটপাটের চিত্র। ২০১৭ সালের কাবিটা নীতিমালা অনুযায়ী হাওরের বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজে এ পর্যন্ত জেলায় ৬৭৮টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) অনুমোদন করা হয়েছে। শুরু থেকেই আমরা পর্যবেক্ষণ করছি পিআইসি গঠনে সংশ্লিষ্টরা ফসল রক্ষায় গুরুত্ব না দিয়ে লুটপাটের দিকেই বেশী মনোযোগী। গত বছরের চেয়ে ১৫০টিরও বেশি প্রকল্প গ্রহণ করে অধিক বরাদ্দ দিয়ে সরকারে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করার পাঁয়তারা করা হচ্ছে। বিগত বছরের অক্ষত বাঁধে পুনঃরায় অধিক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বেশির ভাগ প্রকল্পে কাজের অনুপাতে বেশি বরাদ্দ দিয়ে সরকারের টাকা অপচয় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তারা।
লিখিত বিবৃতিতে আরো বলা হয়, এবারের ফসলরক্ষা বাঁধে পিআইসি গঠনে নীতিমালার তোয়াক্কা করা হয়নি। অনেক কমিটিতে সংশ্লিষ্ট হাওর পাড়ের কৃষকদের প্রাধান্য না দিয়ে দলীয় ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধি ও অকৃষকদের স্থান দেয়া হয়েছে। জেলাব্যাপী অপ্রয়োজনীয় বাঁধের ছড়াছড়ি থাকলেও অনেক ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে কোনো প্রকল্প গ্রহণ না করায় হাওর অরক্ষিত থাকছে। নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকে মাটি উত্তোলনের কথা থাকলেও অনেক বাঁধের গোড়া থেকে মাটি কেটে বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। এমতাবস্থায় অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প বাতিল করা, প্রয়োজনীয় বাঁধে নীতিমালা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সমাপ্ত করাসহ হাওরে ফসল সুরক্ষায় ঝুঁকিপূর্ণ ও অরক্ষিত স্থানে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকল্প গ্রহণে সংশ্লিষ্টদের প্রতি দাবি জানান হাওর বাঁচাও আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। তা না হলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি কৃষকদের সাথে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেয়ার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয় বিবৃতিতে।