সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের সাত দিনব্যাপী নতুন নাট্য উৎসবের দ্বিতীয় দিন গত ৩০ নভেম্বর ঢাকার শিল্পকলা একাডেমিতে মঞ্চায়ন হলো নাটক ‘রাধারমণ’। উৎসবে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে এই নাটকটি যৌথভাবে মঞ্চায়ন করে সুনামগঞ্জ প্রসেনিয়াম ও বন্ধন থিয়েটার।
রাধাকেশবের শিক্ষাগুরু তার বাবা রাধামাধব। পূর্বসুরি কাহ্নপা, মহাকবি সঞ্চয়, সৈয়দ শা নূর, শিতলাং শাহের মতো মহাজনদের বাণী ও বাবা রাধামাধবের শিক্ষায় রাধাকেশবের মন ও মনন গড়ে উঠে। হঠাৎ করে বাবার মৃত্যু রাধাকেশবকে দিশেহারা করে তোলে। বাবা রাধামাধব নিজেকে চেনার ও জানার যে সন্ধান বাবা দিয়েছেন যুবক রাধাকেশব নানা পথ ও মতের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে সেই পথের সন্ধান করতে থাকে। কিন্তু শৈব্য দর্শন ও শাক্ত দর্শন তার মনের পিপাসা মেটাতে পারে না। এদিকে শ্বশুরালয়ে অবস্থানের সময়েই রাধাকেশব সাধক রঘুনাথ ভট্টাচার্যের স¤পর্কে অবগত হন এবং তার কাছে বৈষ্ণব দর্শনের শিক্ষা নেন।
গুরু তাকে বলেন যে, রাধা আর কেশব দুইয়ে মিলে রাধাকেশব বা রাধাকৃষ্ণ। গুরু রাধাকেশবের নাম থেকে কেশবকে বিযুক্ত করে দেন এবং কৃষ্ণের সাথে রমণের জন্য সাধনা করতে বলেন। এরপর গুরু রাধাকেশবের নতুন নামকরণ করেন ‘রাধারমণ’।
ঘরবাড়ি ছেড়ে নলুয়ার হাওড় পাড়ে আশ্রম প্রতিষ্ঠা করে রাধারমণ তার ভজন-সাধন শুরু করেন। আর সেখান থেকে রাধারমণের সাধন-কথন আর গান ছড়িয়ে পড়তে থাকে দূর-দূরান্তে। ওই সময়ে বিশেষ করে রমণীদের কাছে বিশেষ মর্যাদা লাভ করে রাধারমণের গান।
জাত-ধর্মের ঊর্ধ্বে উঠে ধীরে ধীরে সাধারণ মানুষের জীবনের সাথে মিশে একাকার হয়ে যান রাধারমণ। এভাবেই এগিয়ে যায় নাটকটির কাহিনী।
শামীম সাগর নির্দেশিত এই ‘রাধারমণ’ নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন- দেবাশীষ তালুকদার শুভ্র, সাদিকুর রহমান খান রুবেল, সামির পল্লব, অমিত বর্মণ, মাহফুজ আলম, আলাউর রহমান, আশীষ বর্মণ, তূর্য দাশ, রাজীব রায়, পার্থ, হৃদয়, শুভ তালুকদার, হামজা হোসেন, শিল্পা আক্তার, ঝর্ণা বেগম, সুইটি দাস, মাহবুবা আক্তার রিয়া, আশরাফুল ইসলাম আদর, ফয়সাল আহমেদ, মো. সৈয়দ আহমেদ, নদী দে মোহনা, মো. শরীফ আহমদ, আব্দুল মোতালিব, অভিজিৎ ঘোষ চৌধুরী, সুইটি রানী দাস, দৃষ্টি রানী দাস, সৈয়দ নাঈম আহমেদ প্রমুখ।
৫ ডিসেম্বর শেষ হবে সাতদিনের এই নাট্য উৎসব।
প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ মঞ্চনাটক নির্দেশকদের প্রণোদনা প্রদানের মাধ্যমে নতুন নাটক মঞ্চে আনার এবং সেই নাটকগুলোর মঞ্চায়নের উদ্যোগ নিয়েছে নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়। তারই ধারাবাহিকতায় সপ্তাহব্যাপী ‘নতুনের উৎসব ২০১৯’ শিরোনামে নাট্য উৎসবের আয়োজন করেছে নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়।