গতকালের দৈনিক সুনামকণ্ঠের একটি সংবাদ শিরোনাম ছিলো, ‘গীতিকার সেজুল হোসেনকে সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের সংবর্ধনা’। একটু সচকিত হতেই হয়। এমন শিরোনাম বিশেষ করে সুনামগঞ্জের পত্রিকায় মাঝে মাঝেই প্রকাশ হলে শ্রেণিস্তর নির্বিশেষে সকল মহলেরই ভালো লাগে এবং সেই সঙ্গে একটু গর্ববোধে প্রাণিত হওয়ার অবকাশ মিলে। এইটুকু যদি হয় কালেভদ্রে, তবে মন্দ হয় না। আর হলে সেটা একেবারে চাট্টিখানি কথা নয়। কিন্তু এমন সুযোগ কালেভদ্রেও সুনামগঞ্জের মানুষের জন্য সংঘটিত হয় না।
সুনামগঞ্জের সন্তান সেজুল হোসেন শ্রেষ্ঠ গীতিকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন এবং সেই সুবাদে সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাব তাঁকে সংবর্ধনা দিয়েছেন। আমরা সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবকে সাধুবাদ জানাই, সেজুল হোসেনকে সংবর্ধনা দেওয়ার জন্যে। তাঁরা সুনামগঞ্জবাসীর পক্ষ থেকে স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে একটি কর্তব্য পালন করেছেন, সেজুল হোসেনকে এই সম্মান প্রদর্শন করেছেন। আমরা তাঁদের কাজে আনন্দিত, এই জন্য যে, এই জনপদের মানুষ তার কৃতীসন্তানকে অভিনন্দিত করতে ভুল করে না, এই সত্যটি তাঁরা জগৎসংসারে প্রতিভাত করেছেন।
সুনামগঞ্জ সমগ্র বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে একটি পশ্চাৎপদ এলাকা এবং এই এলাকার মানুষের মধ্যে বহির্মুখিবিমুখতার লক্ষণ বিলক্ষণ প্রবল। বিলাতপ্রবাসী হতে এখানকার মানুষ যতোটা মুখিয়ে থাকেন, দেশের অভ্যন্তরে অন্যত্র গমনে ততোটাই অনীহ। এখানকার সাধারণ মানুষ যেমন ঘরমুখো, তেমনি মেধাবীরাও। সুনামগঞ্জের মেধাবী ও প্রতিভাবান মানুষ যাঁরাই জীবনের প্রয়োজনে, তাঁদের মেধার স্বীকৃতির অভিপ্রায়ে, জয় করার স্বপ্ন নিয়ে রাজধানীতে গেছেন তাঁরাই আমাদের সুনামগঞ্জের জন্য সুনাম বয়ে এনেছেন। উদাহরণ হিসেবে দুয়েকজনের নাম তো করাই যায়। যেমন ধ্রুব এষ। যদি তিনি ঢাকাকে তাঁর কাজের ক্ষেত্র করে না তোলতেন তবে হয়তো আজকের অবিস্মরণীয় প্রচ্ছদশিল্পী ধ্রুব এষকে আমরা পেতাম না। বাংলাদেশ তাঁর জন্য গর্ব করে। সেজুল হোসেন মাত্র শুরু করেছেন। তিনিও একদিন জয় করবেন এই বাংলাদেশ, এই বিশ্ব। এই আশা রাখি।
সেজুল হোসেনকে অভিনন্দন। তিনি আমাদের সুনামগঞ্জের মুখ উজ্জ্বল করেছেন, সুনামগঞ্জের গৌরব বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা তাঁর উত্তরোত্তর উৎকর্ষ কামনা করি।