সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থার (ইউনেস্কো) স্বীকৃতি পেল বাংলাদেশের শীতলপাটি। বুধবার দক্ষিণ কোরিয়ার জেজু দ্বীপে ইউনেস্কোর ইন্টারগভর্নমেন্টাল কমিটি ফর দ্য সেফগার্ডিং অব দ্য ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজের ১২তম অধিবেশনে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী শীতলপাটিকে বিশ্বের নির্বস্তুক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য (ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটি) হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার এই তথ্য জানানো হয়।
গতবছর সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় জাতীয় জাদুঘর সিলেটের ঐতিহ্যবাহী শীতলপাটিকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য ইউনেস্কোর কাছে প্রস্তাব দেয়। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের জামদানি, বাউলগান, মঙ্গল শোভাযাত্রাও ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পেয়েছে।
বাংলাদেশের আবহমান সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের এক অনন্য নিদর্শন শীতলপাটি। এই লোকশিল্পটি মুর্তা গাছের বেতী থেকে বিশেষ বুননকৌশলে শিল্পরূপ ধারণ করে।
সিলেট, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, বরিশাল, ঝালকাঠি, কুমিল্লা, ঢাকা, ফরিদপুর, কিশোরগঞ্জ, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, টাঙ্গাইল, নেত্রকোনায় এ গাছ প্রচুর পাওয়া গেলেও শীতলপাটির বুননশিল্পীদের বেশিরভাগই বৃহত্তর সিলেটের বালাগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ এবং সিলেট জেলার নিচু এলাকায় বসবাস করেন।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকে আরও জানা গেছে, এখানকার বুননশিল্পীরা বংশ পরস্পরায় পাটি বুনন কৌশল আয়ত্ত করেছে, সিলেট অঞ্চলের পাটির ঐতিহ্য তাই বহু শত বছরের। প্রায় ১০০ গ্রামের চার হাজার পরিবার সরাসরি এই কারুশিল্পের সঙ্গে জড়িত, পাটির বুননশিল্পীরা পাটিয়াল বা পাটিকর নামে পরিচিত।
পাটি বুননের কাজ নারী-পুরুষ নির্বিশেষে করেন, তবে নারী পাটি বুননশিল্পীদের ভূমিকা বেশি। পুরুষশিল্পী মুর্তা সংগ্রহের পর পরিবারের সকল সদস্য মিলে পাটি তৈরির প্রাথমিক কাজ হিসেবে মুর্তা থেকে পানি ঝরে ফেলেন। এরপর দক্ষ পাটি শিল্পীরা নখানি (নখ দিয়ে বেতী তোলা) করেন, দা দিয়ে সরু করে বেতী তোলেন, রং করার জন্য জ্বাল দেন, পানিতে ভেজানো, রোদে শুকানো ইত্যাদি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বুনন উপযোগী করে তোলেন।