স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জ শহরের প্রতিবাদী মুক্তিযোদ্ধা মালেক হুসেন পীর গত বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের দরোজায় আড়াই ঘণ্টা অনশন করার পর গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে শিক্ষামন্ত্রী বরাবরে নানা দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছেন। স্মারলিপিতে তিনি সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজসহ স্থানীয় সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও ভবন সংকট দূরীকরণ, শিক্ষকদের কর্মএলাকায় থেকে নিয়মিত পাঠদান পরিচালনাসহ কোচিং বাণিজ্য বন্ধের অনুরোধ জানান।
স্মারকলিপিতে মুক্তিযোদ্ধা মালেক হুসেন পীর জানান, তাঁর মেয়ে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। কলেজে নিয়মিত পাঠদান না হওয়ায় সম্প্রতি তার মেয়ের পরীক্ষা খারাপ হয়েছে। এ বিষয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি গত ৩১ নভেম্বর সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের দরোজার সামনে প্রায় আড়াই ঘণ্টা অনশন করেন। এ বিষয়টি সাংবাদিক শামস শামীমের ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। তার প্রতি সংহতি জানান দেশের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। ওইদিন জেলা প্রশাসক তাঁর অনশন ভাঙিয়ে অনশনের কারণ শুনে তাঁকে এ বিষয়ে লিখিত আবেদনের প্রস্তাব দেন। এর প্রেক্ষিতে তিনি মঙ্গলবার বিকেলে জেলা প্রশাসক মো. সাবিরুল ইসলামের কার্যালয়ে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি দেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, তাঁর মেয়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজে শিক্ষক ও শ্রেণিকক্ষ সংকট রয়েছে। তাছাড়া কর্মরত শিক্ষকরাও নিয়মিত অবস্থান করেন না। নিয়মিত ছাত্র-শিক্ষকদের প্রতিষ্ঠানে ধরে রাখতে তিনি ডিজিটাল হাজিরার প্রস্তাব দিয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধা মালেক পীর তাঁর আবেদনে আরো উল্লেখ করেন, জেলা শহরের একমাত্র মহিলা কলেজেও শিক্ষক ও ভবন সংকট রয়েছে। এ কারণে কলেজে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এই দুই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও ভবন সংকট দূর করে পাঠদান গতিশীল করার আহ্বান জানান লিখিত আবেদনে। এছাড়াও সরকারি জুবিলী ও সতীশ চন্দ্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকপদ শূন্য থাকায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত পাঠদান না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে প্রাইভেট কোচিং করছে। এসব সমস্যা সমাধানে একজন ভুক্তভোগী অভিভাবক ও সচেতন মানুষ হিসেবে মন্ত্রীর কাছে এসমস্যার সমাধান চেয়েছেন তিনি।
মুক্তিযোদ্ধা মালেক হুসেন পীর বলেন, নানা কারণেই সরকারি কলেজে নিয়মিত পাঠদান হয়না। এখানে শিক্ষকদের উদাসীনতার সঙ্গে শিক্ষক ও ভবন সংকটও রয়েছে। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য আমি অনশনের পর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছি।
জেলা প্রশাসক মো. সাবিরুল ইসলাম স্মারকলিপি প্রাপ্তির কথা নিশ্চিত করেছেন।