সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
এখন ৬০ বছর হলেই প্রবীণ ধরা হলেও এই বয়সসীমা ৬৫ বছরে উন্নীত করার পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
সোমবার এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে সমাজ কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ এই প্রস্তাব দিলে তাতে সায় দেন মুহিত।
বাংলাদেশে এখন ৬০ বছর ও তদূর্ধ্বরা জ্যেষ্ঠ নাগরিক (সিনিয়র সিটিজেন) হিসেবে স্বীকৃতি পান। ২০১৩ সালে এই সংক্রান্ত নীতিমালার খসড়া অনুমোদন করে সরকার। প্রবীণ নাগরিকদের স্বাস্থ্য, আবাসন, যানবাহনে আসন সংরক্ষণসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে এই নীতিমালায়।
সোমবার ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলে প্রবীণদের নিরাপদ আবাসন নিয়ে সমাজ সেবা অধিদপ্তর ও ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান জ্যেষ্ঠ নাগরিকের বয়স ৬৫ তে উন্নীত করার প্রস্তাব দেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালও প্রস্তাবটি সমর্থন করেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মুহিত তখন বলেন, “প্রতিমন্ত্রী সাহেব খুবই ভালো প্রস্তাব করেছেন, আমরা চেষ্টা করব যাতে এটি পরিবর্তন করতে পারি। তিনি (প্রতিমন্ত্রী) বলেছেন, ৬০ বছরে প্রবীণ নেতা হওয়া এখন উচিত নয়। এটি একান্তই সত্যি কথা, আমাদের অন্তত ৬৫টিতে সেটি নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল এই বয়সসীমা ৭০ করার সুপারিশ জানিয়ে বলেন, “মানুষের গড় আয়ু বেড়ে গেছে।”
সমাজ কল্যাণ প্রতিমন্ত্রীকে এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, “আপনি উদ্যোগ নেন, আমি আপনার সঙ্গে আছি। আমাদের এ আমলে আরও এক বছর আছে, এই এক বছরের মধ্যে এটি পরিবর্তন করার ভূমিকা নিতে পারি, প্রতিশ্রুতি দিতে পারি।”
প্রবীণদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রকাশ করার করার আহ্বান জানিয়ে মুহিত বলেন, “৮৪ বছর বয়সে আমি তো প্রবীণ বটেই। প্রবীণরা চান সমাজ যেন তাদের ভুলে না যায়। আমি মাঝে মাঝে প্রবীণ নিবাসে যেতাম, তৃপ্তির জন্য আমরা কত কিছু করি সেখানে তা পাওয়া যায়। আমাদের প্রত্যেকের উচিত প্রবীণদের তৃপ্তি দেওয়া, প্রবীণদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সেবা প্রকাশ করা।”
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল বলেন, “আমাদের সিনিয়র সিটিজেন থেকে অনেক কিছু পাওয়ার আছে, তাদের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা সমাজকে অনেক এগিয়ে নিয়ে যাবে।”
পিপিপি’র আওতায় মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে মেডিকেল রিসোর্ট ‘অবসর-আমার আনন্দ ভুবন’ নামে প্রবীণদের আবাসন নির্মাণে সমাজ সেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক গাজী মোহাম্মদ নুরুল কবির ও ইউনির্ভাসেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান প্রীতি চক্রবর্তী চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
প্রীতি চক্রবর্তী জানান, এই রিসোর্ট তৈরিতে প্রায় ৬ একর জায়গা এবং অন্যান্য সহযোগিতা দেবে সমাজ সেবা অধিদপ্তর। এখানে ১০০টি নিরাপদ আবাসন, ৫০ শয্যার একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল, খোলা মাঠ, জলাশয় ও সবুজের সমারোহ থাকবে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, সমাজ কল্যাণ সচিব মো. জিল্লুর রহমান, পিপিপি প্রধান নির্বাহী সৈয়দ আফসর এইচ উদ্দিন, ইউনির্ভাসেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী।