মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ মহাপুরুষ। আল্লাহ তাআলা তাঁকে রহমাতুলিল্লাল আলামিন বা সারা বিশ্বের রহমত হিসেবে দুনিয়ায় পাঠান। এ জন্যই হযরত মোহাম্মদ (সা.) যেদিন যে মুহূর্তে পৃথিবীতে তাশরিফ এনেছিলেন, সেদিন ও সেই মুহূর্তটি বিশ্বজগতের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ আনন্দের দিন হিসেবে বিবেচিত। এ জন্যই বলা হয় ঈদে মিলাদুন্নবী বা নবী (সা.)-এর জন্মোৎসব বা জন্ম দিবসের আনন্দ। প্রতিদিন প্রতিক্ষণেই বিশ্বের প্রতি প্রান্তে অযুত কণ্ঠে ধ্বনিত ও প্রতিধ্বনিত হয় তাঁর মহিমাগাথা। মহানবী (সা.) বিশ্বমানবতার প্রতীক ও সত্য-সুন্দরের বাণীবাহক।
ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) শ্রেষ্ঠ দিবস। গোটা পৃথিবীকে আলোকিত করে মা আমিনার কোল আলোকিত করে জন্মগ্রহণ করেন বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ মোস্তফা (সা.)। পৃথিবীর জন্য তিনি মুক্তির দূত হিসেবে প্রেরিত হয়েছিলেন। তিনি নবীদের সর্দার, রাসুলের সর্দার, সৃষ্টি জগতে সর্দার। মহান আল্লাহ তাঁর দ্বীনকে স্বয়ংস¤পূর্ণভাবে প্রচার ও প্রসার করার জন্য মোহাম্মদ (সা.)-কে প্রেরণ করেন। ইসলাম যে পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান-এর শিক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়ন অনুসরণ অনুকরণ শিখাবার জন্যই মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর তশরিফ আনয়ন। হুজুরে পাক (সা.) দুনিয়ার ৬৩ বছর পবিত্র হায়াতে জিন্দেগীতে শিশু ও কিশোর জীবন অতিবাহিত করেছেন। পিতা মাতার ¯েœহ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। কাফির মুশরিকদের পক্ষ হতে অনেক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তাওহিদ প্রতিষ্ঠার পক্ষে যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাওহিদ রেসালাত প্রচার করেছেন। পবিত্র কোরআন শরীফ তাঁর উপর পর্যায়ক্রমে অবতীর্ণ হয়েছে। ছাহাবায়ে কেরাম (রাজি.)-এর মাঝে তিনি তা শিক্ষা দিয়েছেন। হযরত আবু বকর সিদ্দিক, হযরত ওমর ফারুক, হযরত ওসমান, হযরত আলী (রাজি.) মতো বিশ্বস্ত অনুগত খলিফা ও ছাহাবা তৈরি করেছেন। যাঁরা নিজেদের সমস্ত ধন-স¤পদ, স্ত্রী-পুত্রের ভালোবাসা ত্যাগ করে প্রিয় নবীর কদমে উৎসর্গ করেছে জীবন ও অর্থ। লাখ লাখ ছাহাবায়ে কেরামকে নবী নূরে মোস্তফা (সা.) তৈরি করেছেন, শিক্ষা, তালিম ঈমান আমল আখলাক আর চরিত্রে। প্রত্যেক ছাহাবা প্রিয় নবীর আদর্শের মডেল ছিলেন। নবীর আচার ব্যবহার চালচলন উঠাবসা, খাওয়া দাওয়া, বিবাহ-শাদী, লেনদেন সমস্ত কিছুতেই ছাহাবায়ে কেরাম নবী মোহাম্মদ (সা.)-কে প্রতিটি মুহূর্তে অনুসরণ অনুকরণ করেছেন। পারিবারিক সামাজিক রাষ্ট্রীয় ব্যক্তিগত জীবন পর্যন্ত প্রিয় নবীর নির্দেশ মোতাবেক পরিচালনা করেছেন। প্রিয় নবীর সমস্ত মডেল হচ্ছেন ছাহাবায়ে কেরাম (রাজি.)। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ছাহাবায়ে কেরামকে অনুসরণ অনুকরণ করলে আল্লাহ নবী রাসুলের অনুসরণে গণ্য হবে। সমস্ত ছাহাবায়ে কেরামকে হযরত মোহাম্মদ (সা.) নবুয়তি শিক্ষায় তৈরি করেছেন। প্রিয় নবীর প্রতি ভালোবাসা আর আনুগত্যের কারণে দুনিয়া ও আখেরাতে তাঁরা সাফল্য পেয়েছেন। দুনিয়ার সমস্ত সৃষ্টি প্রিয় নবীর উছিলায় সৃষ্টি করা হয়েছে। তাঁকে না প্রেরণ করলে দুনিয়া আখিরাত সৃষ্টি জগতের অস্তিত্ব পাওয়া যেতোনা। সমস্ত কিছুর অস্তিত্ব রাসুল (সা.) এর মধ্যে। রাসুলের আগমন দুনিয়াবাসীর জন্য রহমত ও কল্যাণ। মহানবীর আদর্শ ধারণ করে সত্য, ন্যায় ও কল্যাণের পথে চলাই হোক আমাদের আদর্শ। আজকের দিনে এই শপথই নিতে হবে আমাদের।