গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম আবারো বাড়িয়েছে সরকার; এর ফলে প্রতি মাসে বাড়তি টাকা গুনতে হবে ভোক্তাদের। এই দফায় বাড়ানো হয়েছে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম গড়ে ৩৫ পয়সা বা ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। বর্তমান সরকার আমলে ২০১০ সালের ১ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত আটবার বাড়ানোর হল বিদ্যুতের দাম। এত কম সময়ে বারবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো নাগরিকদের জীবনযাত্রায় বাড়তি চাপ যোগ করবে- এটাই স্বাভাবিক।
নতুন হারে আবাসিকে মাসে ৭৫ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীদের খরচ বাড়বে ১৫ টাকা, ১৫০ ইউনিটে ৪৮ টাকা, ২৫০ ইউনিট পর্যন্ত ৯০ টাকা, ৪৫০ ইউনিট পর্যন্ত ১৯৬ টাকা এবং ১০০০ ইউনিট পর্যন্ত ব্যবহারকারীদের খরচ বাড়বে ৬০৪ টাকা। গত ২৩ নভেম্বর বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন কার্যালয়ে (বিইআরসি) এক সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুতের নতুন দর ঘোষণা করেন। কর্তৃপক্ষ বলছে, বর্ধিত দামে বিদ্যুৎ বিক্রি করে কো¤পানিগুলো অতিরিক্ত এক হাজার ৭০০ কোটি টাকা আয় করবে। তবে ন্যূনতম বিল তুলে দেয়ায় কম বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীদের খরচ কমবে। ৫০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুতের মিনিমাম চার্জ প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর ফলে কিছু দরিদ্র গ্রাহক উপকৃত হবেন। বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিভিন্ন কো¤পানির প্রস্তাবগুলো নিয়ে যে গণশুনানি হয়ে গেল তা বিতরণ ও সঞ্চালনকারী কর্তৃপক্ষ দাম বাড়ানোর পক্ষে নানা যুক্তি দেখালেন।
আমরা মনে করিÑ বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি পেলে সবচেয়ে বিপাকে পড়বে সীমিত আয়ের মানুষ। বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ফলে শিল্প খাতে পড়বে দাম বৃদ্ধির প্রভাব। শিল্পে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে গেলে বাড়বে দ্রব্যমূল্যের দামও। এর মাশুলও দিতে হবে সাধারণ ভোক্তাদের। এমনিতেই মূল্যস্ফীতি অব্যাহতভাবে বাড়তে থাকায় মানুষের দৈনন্দিন ব্যয়ের আকার বেড়েই চলছে। এর ফলে নির্দিষ্ট আয় ও পেশার মানুষের কষ্ট ক্রমাগতভাবে বেড়েই চলেছে। এরপর আবার বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের ব্যয়ভার স্ফীত করার মাধ্যমে দুর্ভোগের মাত্রা বাড়িয়ে দেবে। এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। কৃষি খাতেও এর বিরূপ প্রভাব পড়বে। সার্বিক দিক বিবেচনা করে সরকার বিদ্যুতের দাম কমাবে – এটাই আমাদের প্রত্যাশা।