জায়গা-জমির দাম ও চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আমাদের দেশে একশ্রেণির মানুষের ভূমির প্রতি সীমাহীন লোভ প্রত্যক্ষ করা যাচ্ছে। ভূমিখেকোরা সরকারি খাস জমি থেকে শুরু করে ব্যক্তিমালিকানাধীন এবং বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের জায়গা-জমিও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে নির্দ্বিধায় দখল করে নিচ্ছে। সমাজে এখন তাদের পরিচিতি হয়েগেছে ভূমিদস্যু। তারা নদী-নালা, খাল-বিল, মসজিদ-মাদ্রাসা, কবরস্থান, মন্দির-শ্মশান কোনো কিছুই দখলের ক্ষেত্রে বাদ দিচ্ছে না।
গতকালের দৈনিক সুনামকণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায় শাল্লা উপজেলা সদর ইউনিয়নের মুক্তারপুর গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের শ্মশানের জায়গা দখল করেছে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী। ওই গ্রামের কিছু অসাধু লোক শ্মশানঘাটের ভূমি অবৈধভাবে দখল করে নিয়ে বন্দোবস্তও হাসিল করে নিয়েছে। বর্তমানে শবদেহ পোড়ানোর জন্য চুল্লির জায়গাটুকু মাত্র অবশিষ্ট রয়েছে। শবদেহ পোড়াতেও ভূমিখেকোর দল বাধা প্রদান করছে। এই অবস্থায় অত্র এলাকার হিন্দু জনসাধারণ পড়েছেন বিপাকে। এলাকার একমাত্র শ্মশানঘাটটি তাদের হাতছাড়া হয়ে গেলে শবদেহ পোড়ানোর জায়গা থাকবে না। এই অবস্থায় এলাকার হিন্দু জনসাধারণ আতঙ্কের মধ্যে আছেন তেমনি তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ জরুরি বলে মনে করছেন।
আমরা মনে করিÑ হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সৎকারের জমি নিয়ে দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধ করা এবং ক্রমান্বয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠা ভূমিদস্যুদের প্রতিরোধ করে তাদের হাত থেকে দখলকৃত জমি মুক্ত করা একান্ত প্রয়োজন। এই ধরনের অন্যায়-অপকর্ম করে কেউ যাতে আইনের হাত থেকে রক্ষা না পায় এবং রাজনৈতিক কোন দল বা অঙ্গ সংগঠনে আশ্রয়-প্রশ্রয় না পায়, সেদিকে সংশ্লিষ্ট সবার নজর দিতে হবে। আমরা অবিলম্বে মুক্তারপুর গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের শ্মশানের বেহাত হয়ে যাওয়া জমি পুনরুদ্ধারের জোর দাবি জানাই। প্রশাসন এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে – এটাই আমাদের প্রত্যাশা।