1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
শনিবার, ০৩ জুন ২০২৩, ০৪:৪৩ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

কেন তৃতীয় কাউকে ডাকতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

  • আপডেট সময় রবিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৭

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
মিয়ানমারে নিপীড়নের মুখে পালিয়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে দেশটির সঙ্গে সম্মতিপত্র স্বাক্ষর হওয়াকে ‘বিরাট সাফল্য’ অভিধা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার রাজধানীতে প্রথমবারের মতো ‘রাষ্ট্রদূত সম্মেলনের’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে যে কোনো সমস্যা দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের উপর জোর দেন।
রোঙ্গিহা সমস্যা সমাধানের কথা বলতে গিয়ে ১৯৯৮ সালে আলোচনার মাধ্যমে পার্বত্য শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “কেন আমাকে তৃতীয় কাউকে ডাকতে হবে?”
গত সপ্তাহের শেষে মিয়ানমারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে একটি সম্মতিপত্রে সই করেছেন। ওই চুক্তি অনুযায়ী, ১৯৯২ সালে দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত যৌথ ঘোষণার আলোকে ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া নিজ দেশের অধিবাসীদের ফেরত নেবে মিয়ানমার। রাখাইনে দীর্ঘদিন ধরে জাতিগত নিপীড়নের শিকার হয়ে বিভিন্ন সময়ে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ৯ অক্টোবর সেনা অভিযানের মুখে ৮৫ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। আর এবার ২৫ আগস্টের পর নতুন করে বাংলাদেশে আসে সোয়া ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা।
১৯৭৮ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে মিয়ানমারের আরাকান থেকে রোহিঙ্গাদের চলে আসার বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আন্তর্জাতিক চাপ রয়েছে। কিন্তু দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে অন্তত একটা সমঝোতা করতে পেরেছি, যার মাধ্যমে আমরা আশা করি, অন্তত এই মিয়ানমার নাগরিকদের ফেরত পাঠাতে পারব।”
মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “কোনো সন্দেহ নেই… তারপরও যেহেতু প্রতিবেশী দেশ, প্রতিবেশী দেশের সাথে আমরা একটা ভালো সদ্ভাব রেখে আমরা এই সমস্যার সমাধান করতে চাই।”
রোহিঙ্গাদের মানবিক কারণে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ায় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং দেশের সমর্থন পাওয়ার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “পৃথিবীর প্রত্যেকটা দেশ সমর্থন দিয়েছে, সাধুবাদ জানিয়েছে। তারা জানতে চাচ্ছে- কী কী লাগবে। তারা সব করতে রাজি আছে। বাংলাদেশ বোধ হয় আর কোনদিনই এত বড় কূটনৈতিক সাফল্য অর্জন করতে পারে নাই।”
রোহিঙ্গাদের নিজ বাসভূমিতে ফেরত পাঠাতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত বাংলাদেশে কূটনীতিকদের সক্রিয় থাকার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আন্তর্জাতিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। প্রতিবেশীর সঙ্গে সুস¤পর্ক বজায় রাখতে হবে।”
তিন দিনের এই দূত সম্মেলনে বর্তমানে ৫৮টি নিয়োজিত রয়েছেন বাংলাদেশের কূটনীতিকরা অংশ নিচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যের শুরুতেই অর্থনৈতিক কূটনীতির ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, “ডিপ্লোমেসিতে আগে পলিটিক্যাল বিষয়টা গুরুত্ব পেত। এখন ইকনমিক ডিপ্লোমেসি চালু হয়ে গেছে।”
ব্যবসা-বাণিজ্যের কী ভাবে সম্প্রসারণ করা যায় সে দিকে রাষ্ট্রদূতদের নজর দেওয়ার তাগিদ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা কীভাবে কোন কোন দেশে পণ্য পাঠাতে পারি। বাংলাদেশের স্বার্থ সুরক্ষা, দেশে আরো বিনিয়োগ আনা, নতুন রপ্তানি বাজার সৃষ্টি, জনশক্তি রপ্তানি বৃদ্ধি, প্রবাসী বাংলাদেশীদের সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হতে রাষ্ট্রদূত ও হাই কমিশনারদের নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে।
বিদেশে পালিয়ে থাকা জাতির পিতার খুনী এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা অপপ্রচার চালাচ্ছে। অপপ্রচার করে তারা যেন দেশের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করতে না পারে। পঁচাত্তরের পর তারা দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থেকে অনেক অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছে, তারা বসে নেই। তারা বিদেশে বসে ষড়যন্ত্র করছে, অপপ্রচার চালাচ্ছে।
কূটনীতিকদের দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনতে কাজ করার তাগিদও দেন শেখ হাসিনা।
প্রবাসীদের কল্যাণে কাজ করার তাগিদ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশীরা যেন কোন রকম হয় হয়রানির শিকার না হন। প্রবাসে যারা আছেন তাদের ভালো মন্দ দেখা। তাদের সমস্যাগুলো সমাধান করা। সপ্তাহে কিংবা মাসে একবার প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে বসে তাদের সমস্যার কথা শোনা এবং সমাধান করার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
“এটা ভুলে গেলে চলবে না; তারাই কিন্তু মাথার ঘাম পায়ে ফেলে অর্থ উপার্জন করেন। তারা যে টাকা পাঠায় এটাই আমাদের রিজার্ভের বড় অংশ। আমরা যে এতগুলো কূটনৈতিক মিশন চালাচ্ছি; এর সিংহভাগ কন্ট্রিবিউশন তারাই করছে।”
শেখ হাসিনা বলেন, আমি আবারো বলবো, প্রবাসী বাঙালিরা যেনো হয়রানির শিকার না হন। তাদের সঙ্গে মানবিক দৃষ্টি দিয়ে আচরণ করবেন। তাদেরকে আস্থার জায়গায় নেবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের বন্ধুত্ব হবে সমতার ভিত্তিতে, কারো মুখাপেক্ষী হয়ে না।”
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বক্তব্য দেন; পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক স্বাগত বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্ট গওহর রিজভী, এইচটি ইমাম, তৌফিক-ই-ইলাহী, ইকবাল সোবহান চৌধুরী, সংসদের চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মণি, আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ফারুক খান ও সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শসসের মবিন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com