1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ১১:২৩ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

সুনামগঞ্জ পৌর এলাকা – ১ : পাঁচ প্রাথমিক বিদ্যালয় ও এক বস্তি বোঝা

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৭ নভেম্বর, ২০১৭

শামস শামীম ::
প্রয়াত পৌর চেয়ারম্যান মমিনুল মউজদীন দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হবার পর ২০০০ সাল থেকে বিভিন্ন এলাকায় ৫টি পৌর প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করেন। বিদ্যালয়বিহীন এলাকায় বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নতিতে এই অবদান নেওয়া হলেও সুষ্ঠু নজরদারি ও সুব্যবস্থাপনার অভাবে এখন বোঝা হিসেবে দাঁড়িয়েছে এগুলো। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বেতন দিতে হচ্ছে পৌর তহবিল থেকে। একইভাবে পৌরসভা প্রতিষ্ঠার সময় শহরের প্রাণকেন্দ্রে হরিজন সম্প্রদায়ের পরিচ্ছন্নকর্মীদের বস্তি করে দেওয়া হয়েছিল। উত্তম লাল কলোনী নামের এই বস্তির গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ খরচ বহন করতে হচ্ছে পৌরসভাকেই। পৌরসভা তাদের অন্যত্র বহুতল ভবন করে স্থানান্তরের চেষ্টা করলেও তারা সরতে চায়না বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, শহরের মোহাম্মদপুর, জলিলপুর, নবীনগর, উত্তর আরপিননগর, বড়পাড়ায় পৌর প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। তাছাড়া গত বছর সরকারি হওয়ার আগ পর্যন্ত ওয়েজখালি হোসেন বখত প্রাথমিক বিদ্যালয়কেও পৌর তহবিল থেকে শিক্ষকদের বেতন দিতে হতো। প্রতি বছর পৌর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পিছনে প্রায় লাখ টাকা বেতন চলে যায়। পৌরসভার পশ্চাদপদ ও নি¤œ আয়ের নাগরিকদের সন্তানরা এখানে পড়ালেখার সুযোগ পেলেও সরকারিভাবে তাদের পাঠদানের অনুমোদন নেই। তাই অন্য স্কুল থেকেই তাদেরকে সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। মওসুমের শুরুতে সংশ্লিষ্টদের আকুতি-মিনতি করে বই সংগ্রহ করতে হয়। বর্তমানে চারটি পৌর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ৮২৫ জন শিক্ষার্থী পড়ালেখা করে। শিক্ষকতায় নিয়োজিত আছেন ২৫ জন শিক্ষক।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে তাড়াহুড়ো করে সংশ্লিষ্ট দফতরের পরামর্শ ও নীতি না মেনে বিদ্যালয়গুলো প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। তখন নেওয়া হয়নি পাঠদানের অনুমতি। স্থায়ী, অস্থায়ী রেজিস্ট্রেশন নেওয়া হয়নি। বিদ্যালয়ের নামে পর্যাপ্ত ভূমি বরাদ্দও নেই। এই কারণে সরকারের সর্বশেষ প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণ তালিকায় কোন শর্ত পূরণ করতে না পারায় যুক্ত হতে পারেনি এই বিদ্যালয়গুলো। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন শুরুর সময় যথাযথ নিয়ম মেনে প্রতিষ্ঠা করা হলে সবগুলো বিদ্যালয় সহজেই সরকারিকরণ হয়ে যেতো। শিক্ষকরা এখন দুর্ভোগের মুখে পড়তেন না। পৌরসভার পক্ষ থেকেও প্রতি মাসে মোটা অংকের টাকা বহন করতে হতোনা। শিক্ষার্থীরাও অনিশ্চয়তার মুখে পড়তোনা।
জানা গেছে, পৌর প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকদের বেতন বাবত প্রতি মাসে প্রায় ১ লাখ টাকা ব্যয় হয়। ভবন সংস্কারেও প্রায় সময় খরচ হয়। এভাবে দীর্ঘদিন ধরে চলছে। সূত্র জানায়, প্রাথমিক বিদ্যালয় সর্বশেষ সরকারিকরণের সময় পৌর মেয়র আয়ূব বখত জগলুল জেলা প্রাথমিক অফিসে গিয়ে বিদ্যালয়ের সরকারিকরণ বাবত সরকারি ফি দিতে যান। গিয়ে দেখেন বিদ্যালয়গুলোর কোন ধরনের অনুমোদন নেই। এ কারণেই সরকারিকরণ সম্ভব হয়নি। তিনি সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের কাছেও এগুলো সরকারিকরণের জন্য তদবির করে ব্যর্থ হন। কারণ সরকারিকরণের কোন নিয়মের মধ্যেই বিদ্যালয়গুলো ছিলনা।
এদিকে পৌরসভার প্রতিষ্ঠাকালীন হরিজন সম্প্রদায়কে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের জন্য শহরের প্রাণকেন্দ্র টিএন্ডটি অফিসের উত্তরে উত্তম লাল কলোনি করে দেওয়া হয়। এই কলোনিতে বর্তমান অর্ধশত পরিবার বাস করে। তাদের পানি, গ্যাস ও বিদ্যুৎ বিল দিতে হয় পৌরসভা থেকে। এ থেকেও মোটা অংকের টাকা ব্যয় হচ্ছে পৌরসভার তহবিল থেকে।
সদর উপজেলা সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সোলেমান মিয়া বলেন, সর্বশেষ সরকারিকরণের সময় ধরা পড়ে পৌরসভার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর যে কোন অনুমোদন নেই। কর্তৃপক্ষের সরকারিকরণে যথেষ্ট আন্তরিকতা থাকলেও অনুমোদন না থাকায় সরকারিকরণ সম্ভব হয়নি। এখন পর্যন্ত পাঠদানের অনুমোদনও নেই। তাই শিক্ষার্থীদের পৌরসভার সরকারি অন্যান্য বিদ্যালয়ের হয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। পৌরসভার সংশ্লিষ্টরা শুরুর দিকে সচেতন হলে এখন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এই সমস্যায় পড়তোনা বলে তিনি জানান।
পৌর মেয়র আয়ূব বখত জগলুল বলেন, অতীতে নিয়ম ছাড়াই অনেক কাজ হয়েছে। এমনকি গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও উদাসীনতা ছিল। এই ভুলের কারণে চরম মাশুল দিতে হচ্ছে পৌরসভাকে। এই কারণে সরকারিকরণ থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশপাশি পৌরসভার তহবিল থেকে প্রতি মাসে মোটা অংকের বেতন পরিশোধ করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, এখন পৌরকর আদায়, পানির লাইন ও অন্যান্য বাণিজ্যিক কাজে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনাসহ নাগরিকদের সেবা সংক্রান্ত সব কাজে স্বচ্ছতা নিয়ে আসা হয়েছে। তাছাড়া উত্তম লাল কলোনী অনত্র সরিয়ে তাদের আধুনিক বহুতল ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছি আমরা।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com