নিপীড়িত রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর আরও বীভৎস নির্যাতনের খবর পাওয়া গেছে। রোহিঙ্গাদের নিবাস সংঘাতময় রাখাইনের উপগ্রহ চিত্রে দেখা গেছে, বহু গ্রাম জ্বালিয়ে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হয়েছে। রোহিঙ্গারা বলছেন, ‘গণহত্যার নতুন ধরন’ শুরু করেছে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী। রোহিঙ্গাদের শিরñেদ ও কেটে দ্বিখ-িত করা হচ্ছে। এদিকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতন-হামলা আর ধর্ষণের মুখে রাখাইন রাজ্য থেকে বিপদসংকুল পথ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন ৯০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা এ তথ্য জানিয়েছেন। জাতিসংঘের হিসেবে গত আট মাসে প্রায় এক লক্ষ ৭৫ হাজার রোহিঙ্গা নিপীড়নের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এর মধ্যে গত দশ দিনে এসেছে ৯০ হাজার।
রোহিঙ্গা মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যা। তবে এ সমস্যা বাংলাদেশকেও প্রভাবিত করছে। মানবিক দিক বিবেচনা করে বিপুলসংখ্যক মিয়ানমারের নাগরিককে বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। তবে তা বাংলাদেশের জন্য বিরাট বোঝা। ভবিষ্যতে এটি নানা ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করবে তা নিঃসন্দেহে বলা যায়।
সু চি শান্তিতে নোবেল বিজয়ী হয়েও তার রাষ্ট্রের নাগরিক সমস্যা সমাধানে সামরিক শক্তি প্রয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে যে মনোভাব প্রকাশ করেছেন তা কোনো বিবেকবান মানুষ মেনে নিতে পারেন না। রোহিঙ্গা সমস্যা মিয়ানমারের জন্য বড় কোনো সমস্যা নয়। ২ লাখ ৬১ হাজার বর্গমাইল আয়তন বিশিষ্ট মিয়ানমারের জনসংখ্যা মাত্র ৫ কোটি ৪৫ লাখ এবং প্রতি বর্গমাইলে মাত্র ২১৫ জন মানুষ বাস করে। মিয়ানমার একটি স¤পদশালী রাষ্ট্র যার রয়েছে বিশাল খনিজ, বনজ ও কৃষি স¤পদ। আমরা মনে করি, রোহিঙ্গাদের জাতিগত সমস্যা মিয়ানমারের একান্ত অভ্যন্তরীণ সমস্যা এবং এর সমাধান অবশ্যই মিয়ানমারকেই করতে হবে। তবে আপত দৃষ্টিতে এই সমস্যা সমাধানে মিয়ানমার সরকার কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এক্ষেত্রে মিয়ানমারের উপর আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগের বিকল্প নেই।