শিক্ষার ভিত্তিভূমি প্রাথমিক শিক্ষা। এই শিক্ষার ভিত্তি যদি শক্ত ও মজবুত না হয় তাহলে উচ্চ পর্যায়ের শিক্ষাতেও শিক্ষার্থীরা সুফল দেখাতে পারে না। একটি বিদ্যালয়ের একাডেমিক, প্রশাসনিক ও মনিটরিং সকল বিভাগ দেখভালের দায়িত্ব প্রধান শিক্ষকের। সহকারি শিক্ষকদের নেতৃত্বদান, ব্যবস্থাপনা কমিটি ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় সাধনসহ সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনায় প্রধান শিক্ষকের পদটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু প্রাথমিক পর্যায়ে বিদ্যালয়গুলোতেই যদি শিক্ষক সংকট থাকে তাহলে তো মানসম্মত পাঠদানই ব্যাহত হবে।
গতকালের দৈনিক সুনামকণ্ঠের একটি সংবাদ থেকে জানা যায়Ñ দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই। ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক দিয়ে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। এ উপজেলায় ৯৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রয়েছে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষার্থী। বিদ্যালয়গুলোতে ৯৭ জন প্রধান শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে কর্মরত আছেন ৩৮ জন এবং ৬৯টি বিদ্যালয়ের একটিতেও প্রধান শিক্ষক নেই। মোট ৪শত ১৬ জন শিক্ষক কর্মরত থাকলেও ১৩৮টি পদ এখনো শূন্য রয়েছে।
স্বীকার করতে হবে যে বর্তমান সরকারের আমলে প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ হয়েছে। ধাপে ধাপে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবুও শিক্ষক সংকট দেখা দিচ্ছে। এটা প্রত্যাশিত নয়। আমরা মনে করি, নিয়মিত নিয়োগ প্রদান এবং নিজের পছন্দমতো এলাকায় অযৌক্তিক বদলি ঠেকানো গেলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় শিক্ষক সংকট মোকাবেলা করা সম্ভব।
মনে রাখতে হবে, শিক্ষার ভিত্তিভূমি প্রাথমিক শিক্ষা কোনোভাবেই জোড়াতালি দেয়ার খাত নয়। এটা এমন এক ক্ষেত্র, যেখানে কোনো ঘাটতি দেখা দিলে ভবিষ্যতে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে অন্যান্য খাতেও। তাই দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হোক।