স্টাফ রিপোর্টার ::
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আ.লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা করে জঙ্গিরা। তৎকালীন ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের একটি অংশের ছত্রছায়ায় এই হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে চালানো হামলার সময় আ.লীগ নেতা-কর্মীরা মানবঢাল তৈরি করে তাঁকে রক্ষা করেন। তবে কেন্দ্রীয় নেত্রী আইভি রহমানসহ আ.লীগের অনেক নেতাকর্মী নিহত হন। রক্তে ভিজে যায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউ এলাকা। ভয়াল ওই দিনটি এরপর থেকেই সারাদেশে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা পালন করে হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে মুখর হলেও কোন্দলের কারণে বরাবরের মতো এবারও দায়সারা কর্মসূচি পালন করেছে জেলা আওয়ামী লীগের একটি অংশ। আরেকটি অংশকে মাঠেই দেখা যায়নি। এই দায়সারা কর্মসূচি পালন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তৃণমূল নেতৃবৃন্দ।
জানা গেছে, ২০১৬ সনের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রায় দেড়যুগ পর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করে কমিটি গঠন হয়। কমিটি গঠনের পর শুধু আনন্দ মিছিল এক হয়ে করেছিলেন সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন। পরে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এক হয়ে পালন করেছিলেন দু’জন। তবে সভাপতি ওইদিন তার বলয়ের আরেকটি সভায়ও যোগ দেন। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে জেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে দলীয় সমর্থিত প্রার্থী ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমনের বিরুদ্ধে গিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষ নেন জেলা সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমান। কিছুদিন আগে জাতীয় শোক দিবস পালন নিয়ে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বিবৃতিযুদ্ধে অবতীর্ণ হন। দুই নেতাই দলবল নিয়ে পৃথকভাবে কর্মসূচি পালন করেন। ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন উকিলপাড়া পয়েন্টে এবং আলহাজ্ব মতিউর রহমান আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি পালন করেন।
এদিকে ২১ আগস্ট শেখ হাসিনার উপর গ্রেনেড হামলার আলোচিত ঘটনাটি সারাদেশের নেতাকর্মীরা ক্ষোভ ও দ্রোহের আবহে পালন করে ঘাতকদের শাস্তি দাবি করলেও সুনামগঞ্জে অন্যান্য কর্মসূচির মতো দায়সারা করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। দলটির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন উকিলপাড়ায় তার কার্যালয়ে তার বলয়ের নেতাকর্মীদের নিয়ে কর্মসূচি পালন করেন। তবে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা পলাশ বাজারে তিনি এ উপলক্ষে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।
ব্যারিস্টার ইমন ঘরোয়া কর্মসূচি পালন করলেও মতিউর রহমানের দেখা পাওয়া যায়নি। তার বলয়ের অন্য শীর্ষ সেতাদেরও কেউ দিবসটি পালন করেনি। তাদের অনুসারীরাও ছিলেন অনেকটা নিরব।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার উপর গ্রেনেড হামলার ঘটনায় আমরা আজ দলীয়ভাবে কর্মসূচি পালন করে ঘাতকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়ে আসছি। এছাড়াও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার পলাশ বাজারেও বিশাল সমাবেশে জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ছিলেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমানের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।