গভীর শ্রদ্ধায় যখন গোটা জাতি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শাহাদাতবরণকারীদের স্মরণ করছিল, ঠিক সেই সময়ে ধানম-ির ৩২ নম্বরে আয়োজিত মিছিল-সমাবেশে বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা করেছিল জঙ্গিরা। তবে সন্ত্রাসবাদীদের সেই পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিয়েছে আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী। রাজধানীর পান্থপথে জঙ্গি আস্তানায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান ‘অপারেশন আগস্ট বাইটে’ জঙ্গি সাইফুল ইসলাম নিহত হয়েছে। পুলিশের আইজিপি একেএম শহীদুল হক জানিয়েছেন, শোকাবহ আগস্টের কর্মসূচিতে জঙ্গিদের বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা ছিল জঙ্গিদের। কিন্তু গোয়েন্দাদের তৎপরতায় সেটা সম্ভব হয়নি। নিহত ওই জঙ্গি ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। তার পিতাও জামায়াতের নেতা বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে।
এই ঘটনাটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির ধারাবাহিক ষড়যন্ত্রের অংশ এটি। তারা কখনো বাংলাদেশের স্বাধীনতা চায়নি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মত্যাগকে স্বীকার করেনি, বাংলাদেশ একাত্তরের চেতনায় এগিয়ে যাক সেটা চায়নি। ধর্মের দোহাই দিয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে স্বাধীনতাবিরোধীরা। রাজনীতির নামে মানুষ হত্যা, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানো, নাশকতা, বিশৃঙ্খলা তৈরি করা সর্বোপরি দেশকে অস্থিতিশীল করাই তাদের লক্ষ্য।
এ কথা বলতে দ্বিধা নেই, একাত্তরের পরাজিত শক্তিই বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে জাতির জনকের নাম মুছে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু ঘাতকদের স্বপ্ন সফল হয়নি। বঙ্গবন্ধুকে বাঙালিরা তাদের হৃদয়ে স্থান করে দিয়েছেন। বাঙালির হৃদয় থেকে বঙ্গবন্ধুকে কখনো মুছে দেয়া যাবে না। একাত্তরের পরাজিত শক্তিকে দেশের শান্তিকামী জনতা বারবার পরাজিত করে প্রমাণ করেছে কোনো চক্রান্ত ষড়যন্ত্র করেই বাঙালি জাতিকে দমিয়ে রাখা যাবেনা। বাংলাদেশ মানেই বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে বাঙালি জাতি কলঙ্কমুক্ত হতে যাচ্ছে। কিন্তু সেইসব ঘাতক ও দোসররা বসে নেই। তারাও দেশে-বিদেশে নানা ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে। এ ব্যাপারে আমাদের প্রত্যেককে সতর্ক থাকতে হবে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে হায়েনাদের বিষদাঁত ভেঙে দিতে হবে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি সাধারণ নাগরিককে জঙ্গি-সন্ত্রাস এবং দেশবিরোধী অপতৎপরতা রুখে দাঁড়াতে হবে।