টানা বর্ষণে ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জ জেলার সবক’টি নদ-নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সুরমা, যাদুকাটা, চেলাসহ সবক’টি ছোট বড় নদ-নদী এবং হাওরের পানিও বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় বিভিন্ন স্থানের ঘর-বাড়ি, রাস্তা-ঘাট, ফসলাদির ক্ষতি হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, মৌসুমী বায়ুর কারণে আরো কয়েকদিন দেশের অধিকাংশ জায়গায় মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে। সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
এদিকে নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। বিশ্বম্ভরপুর-তাহিরপুর এলাকার রাস্তা-ঘাট প্লাবিত হয়েছে এবং সড়কে সরাসরি যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। একইভাবে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা পলাশ-লাউড়েরগড় সড়কের শরীফপুর এলাকায় ঢলের পানিতে সড়ক ভেঙে যাওয়ায় ওই সড়কেও যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। পাহাড়ি ঢলে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার পুরান যাদুকাটা, ধামালিয়া, রূপসাসহ বিভিন্ন নদী ও ছড়ার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ বছর এমনিতেই সুনামগঞ্জে বেশ কিছু দুর্যোগ ঘটে গেছে, যেগুলোর প্রভাব কাটিয়ে ওঠা খুব সহজ কাজ নয়। গত ফালগুন-চৈত্র মাস থেকেই অস্বাভাবিকভাবে বৃষ্টিবাদল-ঝড়, হাওরে ফসলহানির ঘটনা মানুষকে কষ্টে ফেলে দিয়েছে। সেই কষ্টের মধ্যেই এখন বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। নিকট অতীতে এত সব দুর্যোগ এভাবে দেখা যায়নি। আবহাওয়ার বিরূপ প্রতিক্রিয়া আমরা লক্ষ করছি। এগুলোর নেতিবাচক প্রভাবকে উপেক্ষা করে চলার আর সুযোগ নেই। এ বছর গরম যেমন ছিল অসহনীয়, একইভাবে অতিবৃষ্টি-পাহাড়ি ঢল হাওরবাসীর জীবনযাত্রা, সুখ-শান্তিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। বিষয়গুলো নিয়ে যে পরিমাণ জনসচেতনতা তৈরি হওয়া জরুরি ছিল তা হয়নি। সবাই একটা কথাই বলেন, সবকিছু দেখার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। তবে আমরা মনে করি, শুধু রাষ্ট্র আর সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকলে হবে না। সবাইকে সম্মিলিতভাবে দুর্যোগ মোকাবেলায় আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসতে হবে। রাজনীতির উদ্দেশ্য যদি হয় মানুষের সেবা করা, তাহলে এ সময়ে প্রয়োজন সেই সেবার স্বাক্ষর রাখা।