রাতের শুরুতেই আতঙ্ক শুরু হয় শহরের পশ্চিম নতুনপাড়া এলাকার বাসিন্দা জনমানুষের মধ্যে। শহরের সবচেয়ে নিরাপদ ও শান্তিপ্রিয় আবাসিক এলাকা হিসেবে পরিচিত এই এলাকা। কিন্তু কিছুদিন ধরে বহিরাগত মাদকসেবী ও বখাটেদের উৎপাতে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। যদিও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছেন, তবুও চলছে বখাটেদের নানা উৎপাত। কমপক্ষে ১শ’ পরিবারের বসবাস শহরের পশ্চিম নতুনপাড়া এলাকায়। বহিরাগত বখাটেরা নিয়মিত আড্ডাবাজি, চিৎকার, হইহুল্লোড় করে বিষিয়ে তোলছে এলাকাকে। সে সাথে মাদকগ্রহণ করে বহিরাগত বাসিন্দাদের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ চালিয়ে যাচ্ছে বখাটেরা।
স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্রীদের বেলায় এ আতঙ্ক আরো বেশি। বখাটেরা বাসার কাছে সড়কে দাঁড়িয়ে ছাত্রীদের নাম ধরে ডাকাডাকি করে। বাজে কথা বলে। দিন যতো যাচ্ছে এ এলাকায় মানুষ বাড়ছে, বাড়ছে নতুন নতুন ভবনের সংখ্যাও। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েই চলেছে বিভিন্ন এলাকার বখাটেদের আনাগোনাও। এ মহল্লায় বখাটেরা রাতের বেলা মোটরসাইকেল নিয়ে প্রবেশ করার পাশাপাশি পায়ে হেঁটে দলবল নিয়ে ঢুকছে। অন্য এলাকা থেকে আগত বাসিন্দারা এসব বখাটেদেরকে সাহস করে কিছু বলতেও পারছেন না। পশ্চিম নতুনপাড়া এলাকার বাসিন্দাদের অধিকাংশই ভাড়াটিয়া। দূর দূরান্ত থেকে চাকরির সুবাদে সুনামগঞ্জ আসা এবং কেউ কেউ ব্যবসার তাগিদে এখানে এসে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। স্থায়ী বাসিন্দা না হওয়ায় এসব বখাটেদের অত্যাচার মুখ বুজে সহ্য করছেন তারা।
পশ্চিম নতুনপাড়ায় রাতের অন্ধকার যেন অতঙ্ক হয়েই রূপ নিয়েছে বাসিন্দাদের কাছে। সম্প্রতি এলাকার একটি প্রবাসী মালিকানাধীন ভবনের নিচতলায় বসবাসকারী এক পরিবারের সঙ্গে অশোভন আচরণ করে বখাটেরা। রাতের আঁধারে ভবনের সামনেই তারা তা-ব চালায়। ঘর থেকে তারা এক তরুণীকে উঠিয়ে নেয়ারও চেষ্টা করে। এ ঘটনায় বাধা দিতে গিয়ে বেধড়ক মার খেতে হয় ওই তরুণীর ভাইকে। বখাটেরা প্রভাবশালী হওয়ায় বিষয়টির ব্যাপারে তেমন কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি নির্যাতিত পরিবারের সদস্যরা। এ অবস্থা কখনোই কাম্য হতে পারে না। আমরা শান্তির শহর সুনামগঞ্জে অশান্তি চাই না। যারা এই অশান্তি সৃষ্টি করে তাদের কঠোর হাতে দমন করতে হবে। এক্ষেত্রে পুলিশ প্রশাসনকে নজরদারি বাড়াতে হবে। অপরাধী যেই হোক তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। পুলিশের পাশাপাশি এলাকাবাসীকে সম্মিলিতভাবে বখাটেদের মোকাবেলায় উদ্যোগী হতে হবে।