সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
সিলেটের গোলাপগঞ্জের বুধবারীবাজার ইউনিয়নের বনগাঁও গ্রামে ১০ বছরের এক শিশু গৃহকর্মীকে শ্বাসরোধে হত্যা ও লুকিয়ে লাশ দাফন চেষ্টার অভিযোগে গৃহকর্তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার কামরুল ইসলাম (২০) বনগাঁও গ্রামের মৃত মতিউর রহমানের ছেলে। নিহত গৃহকর্মী খাদিজা (১০) সুনামগঞ্জের তাহিরপুর গ্রামের দিনমজুর আলী নূরের ছোট মেয়ে।
গোলাপগঞ্জ মডেল থানার পুলিশ গত শনিবার সকালে কামরুলদের বাড়ি থেকে শিশু খাদিজার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
জানা যায়, শুক্রবার (৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় খাজিদা মারা গেলেও পুলিশকে না জানিয়ে ঘটনাটিকে ‘আত্মহত্যা’ বলে চালিয়ে দেওয়া এবং শনিবার সকালে লাশ দাফনের চেষ্টা করে অভিযুক্ত কামরুল ইসলামসহ তার স্বজনরা।
এদিকে গোলাপগঞ্জ থানায় গিয়ে মেয়ে হত্যার বিচার চেয়েছেন খাদিজার বাবা আলী নূর। তিনি জানান, কামরুলের বাবা মারা যাওয়ায় তার বৃদ্ধ মাকে দেখাশোনার জন্য খাদিজাকে প্রায় চার মাস আগে কামরুলদের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজে দেন। প্রতি মাসে ৫শ’ টাকা করে বেতন দেওয়ার কথাও ছিল।
খাদিজার বাবা আলী নূর বলেন, ‘ঘটনার দিন শুক্রবার (৪ আগস্ট) মাগরিবের নামাজের পর কামরুল আমার বাড়িতে এসে জানায়, খাদিজা গলায় ওড়না লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। খবর পেয়ে আমি তাদের বাড়িতে গিয়ে দেখি, মেয়ের গলায় ওড়না পেঁচানো। ওড়নার অপর দিক জানালার গ্রিলের সঙ্গে বাঁধা।’
খাদিজার মা কুলসুমা বলেন, ‘আমার মাইয়াকে হত্যা করা অইছে। অভাবের সংসারের লাগি মাইয়ারে কাজে দিছলাম। আর তারা দিলও মাইয়ার লাশ।’
গোলাপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (প্রশাসন) ফজলুল হক জানান, পুলিশ ধারণা করছে, শিশুটিকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশকে না জানিয়ে লাশ লুকিয়ে ফেলারও চেষ্টা করা হয়। পরে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ওসমানী মেডিক্যাল হাসপাতালের মর্গে লাশ পাঠায়। এঘটনায় বাড়ির গৃহকর্তা কামরুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আর শিশুটির পিতা থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
লাশের সুরতহাল করেছেন গোলাপগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (অপারেশন) দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘পুলিশকে না জানিয়ে লাশের গোসল করানোর কারণে শিশু খাদিজা ধর্ষণের শিকার হয়েছে কিনা প্রাথমিকভাবে তা শনাক্ত করা যায়নি। তবে গলার হাড় ভাঙা। খাদিজাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করছি।’