স্টাফ রিপোর্টার ::
তাহিরপুর উপজেলার টেকেরঘাটে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত স্থানে ‘নিলাদ্রী ডিসি পার্ক’ নামকরণ ইস্যুতে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হওয়ায় জেলা প্রশাসক রোববার তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক মো. সাবিরুল ইসলাম প্রকল্পের বিস্তারিত তুলে ধরে কাজ শেষে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এলাকাটি নামকরণের ঘোষণা দেন। তিনি মুুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত এই অনন্য স্থানটিকে টেকেরঘাট স্বাধীনতা চত্বর বা স্বাধীনতা উপত্যকা হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনার কথা জানান।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, নামকরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আমরা এখানে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুলের ছবিসহ জীবনবৃত্তান্ত সম্বলিত ফলক তৈরি করে দেব। তিনি বলেন, টেকেরঘাট মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। তাই এখানে প্রয়োজনে প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধার এক একটা চত্বর থাকবে। যারা যুদ্ধের সময় ছিলেন এবং এখন যারা জীবিত আছেন তাদের সাথে কথা বলেই সেটা করব।
সাংবাদিকদের এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক মো. সাবিরুল ইসলাম বলেন, নিলাদ্রী পার্ক উদ্বোধনের সময় ফলকটা দেখেছেন। ফলকে লেখা আছে ‘হাওরকন্যা সুনামগঞ্জের মাছ, ধান গান/সুরমা তীরে এনেছিল মুক্তিযুদ্ধের প্রাণ’। অনেকে বলছেন আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নষ্ট করে দিচ্ছি। আরেকটা হচ্ছে ফলকের নামের মধ্যে লেকের কথা কি কোনো ভাবে টেনেছি? প্রকল্পটার নাম দেওয়া হয়েছে নিলাদ্রী ডিসি পার্ক। শহীদ সিরাজ বীর বীক্রমের নামে যে লেকটা সেই লেকটা নাম পরিবর্তনের কথা বা অন্য কোনো কথা আসছে কিনা? তিনি বলেন, একজন শহীদ বীর বীক্রমের নামে করা যে লেক সেই লেকের নাম পরিবর্তন করার মতো ধৃষ্টতা বা দুঃসাহস কোনোটাই আমাদের নেই।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, টেকেরঘাট অঞ্চলটা ছিল একটি মুক্তাঅঞ্চল। এখানে মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রয়াত এমপি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ছিলেন। একজন শহীদের নামের লেকটি আমরা পরিবর্তন করতে আমরা পারি না এবং বাস্তবে আমরা এটি করিও না।
তিনি আরো বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে আগের জেলা প্রশাসক একজন ঠিকাদারকে নিয়োগ দিয়ে গেছেন। সেখানে আমরা কর্মপরিধি বাড়ানোর জন্যে অনেক ক্ষেত্রে খরচের জায়গাটা কমিয়েছি। জেলা প্রশাসক এখানে মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর ও লাইব্রেরি করার ঘোষণা দেন। এখানে মুক্তিযুদ্ধের স্মারকস্তম্ভ সংস্কারে উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশনা দেন।
জেলা প্রশাসক সাবিরুল ইসলাম আরো বলেন, এখানে শহীদ সিরাজসহ তিন মুক্তিযোদ্ধার কবর রয়েছে। এই কবরস্থানগুলো সংস্কারের কাজও আমরা করব। আমি উপজেলা ইঞ্জিনিয়ারকে সংস্কার করার নির্দেশনা দিয়েছি। এনিয়ে ভুল না বুঝার জন্য তিনি সাংবাদিক ও সুধীসমাজের প্রতি অনুরোধ জানান।