স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জের বাজারে গত এক সপ্তাহ ধরে পেঁয়াজের দাম বেড়েই চলেছে। শহরের খুচরা দোকানগুলোতে পেঁয়াজ বেশি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। এলসি’র আমদানিকৃত ছোট আকারের পেঁয়াজ দেশীয় পেঁয়াজ বলে বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ ক্রেতাদের।
রমজানের সারা মাস নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে থাকায় পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পায়নি। তখন পেঁয়াজের দাম ছিল সর্বোচ্চ ২০ টাকা কেজি। ঈদ পরবর্তী সময়ে বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়ে চলেছে।
শহরের বিভিন্ন স্থানের মুদি দোকানগুলোতে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২২ টাকা থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে। জগন্নাথবাড়ি এলাকায় সকল দোকানেই অতিরিক্ত দামে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। সুরমা মার্কেটের সামনে ও আশপাশের দোকানে, পূর্ববাজার জামে মসজিদ মার্কেটের আশপাশের দোকানে এবং মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটের বিভিন্ন দোকানে অতিরিক্ত দামে পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারের প্রায় খুচরা দোকানে ছোট আকারের যে পেঁয়াজ ২২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, সেই পেঁয়াজ ছোলা ফেলে বিক্রি হচ্ছে ২৪ টাকা কেজি দরে। পাশের দোকানে এ পেঁয়াজ আবার বিক্রি হচ্ছে ২৬ টাকা কেজি দরে। আবার কোনো কোনো দোকানে ৩০ টাকা ২৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে একই পেঁয়াজ। তারা জানান, এটা দেশী পেঁয়াজ। এ জন্য বেশি দাম।
শহরতলির ধারারগাঁও গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আবু তাহের বলেন, ‘রমজানে দ্রব্যমূল্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে ছিল। তাই সকল নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দামও নিয়ন্ত্রণে ছিল। ঈদ পরবর্তী সময়ে বাজারে দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণ নেই। তাই পেঁয়াজের দাম বেড়েই চলেছে। খুচরা বাজারে যারা অযথাই পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি করেছে, তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হোক।’
বাজারের ক্রেতা জগন্নাথপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম অযথাই বাড়িয়ে দেয়। কোনো কিছুই বুঝা যায় না। যে দোকানে সকালে ৩০ টাকা করে পেঁয়াজ কিনেছি, বিকেলে এটার পাশের দোকানে আবার ২৪ টাকা কেজি দরে একই পেঁয়াজ বিক্রি করতে দেখা গেছে।’
একাধিক খুচরা ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমরা ছোট আকারের দেশী পেঁয়াজ ২৮ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি।’ কিন্তু একাধিক পাইকারি ব্যবসায়ী বলছেন, ‘এলসি’র আমদানিকৃত ছোট আকারের পেঁয়াজ আমরা ১৭ টাকা থেকে ১৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী জানান, ‘এলসি’র আমদানিকৃত ছোট আকারের পেঁয়াজই বাজারে দেশী পেঁয়াজ বলে বিক্রি করছেন অসাধু খুচরা ব্যবসায়ীরা।’
জগন্নাথবাড়ি এলাকার পাইকারী দোকানের ব্যবসায়ী বিনয় রায় বলেন, ‘ভারতীয় এলসি’র আমদানিকৃত ছোট আকারের পেঁয়াজ ২০ টাকা কেজি দরে এবং বস্তায় ১৮.৫০ পয়সা হিসেবে বিক্রি করছি। পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার কোনো কারণ নেই।’
অনিল স্টোরের পাইকারি বিক্রেতা ভীম রায় বলেন, ‘এলসি’র ছোট আকারের পেঁয়াজও আমরা কম মূল্যে বিক্রি করছি। বাজারে ২০ টাকা কেজি দরের উপরে কোনো পেঁয়াজ বিক্রি করার কথা নয়। পেঁয়াজের আমদানিও আছে।’