জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ::
স্থানীয় প্রশাসনের বাধা-নিষেধ উপেক্ষা করে ছাতকের ইসলামপুর ইউনিয়নে টিলা কেটে পাথর উত্তোলন করছে একটি প্রভাবশালী মহল। দু’মাস ধরে ইসলামপুর ইউনিয়নের ধনী টিলায় চলছে পাথর লুটের মহোৎসব। এতে শ্রী হারাচ্ছে আদিবাসী সম্প্রদায়ের আবাসস্থল ঐতিহ্যবাহী ধনী টিলা। প্রভাবশালী এ মহলটি টিলা কেটে প্রতিদিন পাথর উত্তোলন করে বিক্রি করছে। এ চক্রের পাথর উত্তোলন ও পরিবহনের কারণে এলাকার পরিবেশ হুমকির মুখে পড়েছে, পাশাপাশি রাস্তাঘাটেরও ক্ষতি হচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ব্রজেন্দ্র কুমার সিংহ নামে এক ব্যক্তির নেতৃত্বে সিলেট, ছাতকসহ এলাকার একটি প্রভাবশালী চক্র টিলা কেটে পাথর উত্তোলন ও বিক্রির সাথে জড়িত রয়েছে। পুলিশ-বিজিবি’র একাধিক অভিযানের পরও অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন বন্ধ করা যাচ্ছে না। অবাধে পাথর উত্তোলনের ফলে ধনী টিলা সমতল ভূমিতে পরিণত হচ্ছে। এ ব্যাপারে স্থানীয়রা প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
স্থানীয়রা আরো জানান, পাথরখেকো চক্রের অব্যাহত আগ্রাসনে এ টিলায় স্থাপিত মসজিদ, স্কুল, বিজিবি’র হেলিপেড ও চার গ্রামবাসীর ঈদগাহসহ মনিপুরী সম্প্রদায়ের ক্লাবঘর ও মন্দির হুমকির মুখে পড়েছে।
ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হেকিম জানান, এলাকার পরিবেশ ও রাস্তা-ঘাট রক্ষায় ধনীটিলা থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ করে দিতে হবে।
ইউপি সদস্যা হেলিমা বেগম, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদসহ এলাকার অন্যান্য লোকজন জানান, টিলা কেটে পাথর উত্তোলন বন্ধের ব্যাপারে প্রশাসনের উদ্যোগে কয়েক দফা অভিযান পরিচালিত হয়েছে। তবে এ পর্যন্ত টিলা কাটার সাথে জড়িত কাউকে আটক করা হয়নি।
অভিযুক্ত ব্রজেন্দ্র কুমার সিংহ’র দাবিÑ তিনি টিলার ভূমি লিজ নিয়ে বৈধভাবেই পাথর উত্তোলন করছেন।
এ ব্যাপারে সহকারি কমিশনার (ভূমি) সাবিনা ইয়াসমিন জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ধনী টিলা থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এ সংক্রান্ত বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে দু’দফায় তদন্ত কমিটি সরেজমিন তদন্ত করেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাছির উল্লাহ খান জানান, ধনী টিলায় পাথর উত্তোলন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। যদি কে বা কারা চোরাই পথে পাথর উত্তোলনের চেষ্টা করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।