1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৪:০৩ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজে অনিয়ম-দুর্নীতি : পিআইসি’র বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি

  • আপডেট সময় শনিবার, ৮ জুলাই, ২০১৭

বিশেষ প্রতিনিধি ::
হাওরের ফসলহানির ঘটনায় দুর্নীতির অভিযোগে সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্মকর্তা ও ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে গত রোববার মামলা দায়েরের পর অভিযুক্ত পিআইসি’র (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) বিরুদ্ধেও মামলা দায়েরের দাবি উঠেছে। বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ নানা ফোরামে-আলোচনায় যেসব পিআইসি দুর্নীতি-অনিয়মের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের জন্য দুদকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
কৃষকরা জানান, গত ২৯ মার্চ থেকে সুনামগঞ্জের হাওরের ফসল বাঁধ ভেঙে, যথাসময়ে বাঁধ না দেওয়ার কারণে জেলার প্রায় দেড় শতাধিক হাওরের সম্পূর্ণ বোরো ফসল তলিয়ে গেছে। একই সময়ে সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোণার হাওরেরও একমাত্র ফসল আগাম তলিয়ে যায়। সরকারি হিসেবে ৬ জেলায় প্রায় ৮ লাখ ৫০ হাজার ৮৮ কৃষক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হাওরের একমাত্র ফসল তলিয়ে যাওয়ায় সরকার এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহে ৬ জেলার প্রায় তিন লাখ ৩০ হাজার কৃষককে তিন মাসের বিশেষ ভিজিএফ (৩০ কেজি চাল ও ৫০০ টাকা মাসিক) প্রদান করছে। সরকারি হিসেবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় সুনামগঞ্জ। এই জেলায় ২ লাখ ২৩ হাজার ৮২ হেক্টর জমির মধ্যে সরকারি হিসেবে ১ লক্ষ ৬৬ হাজার হেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সাড়ে ৩ লাখ কৃষক পরিবারের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩ লাখ ২৫ হাজার কৃষক পরিবার। ফসলহানির ঘটনায় এলাকাবাসী পাউবো, পিআইসি ও ঠিকাদারদের দায়ী করে আসছে। তাদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন-বিক্ষোভ সমাবেশ-সড়ক অবরোধসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছেন কৃষক-জনতা।
কৃষক ও স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিরা জানান, গত ১৫ ডিসেম্বর হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ শুরু করে ২৮ ফেব্রুয়ারি শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এই সময়ে ২০ ভাগ কাজও হয়নি। কৃষকদের মতে মার্চ মাস পর্যন্ত প্রায় ৫০ ভাগ কাজ হলেও পাউবো’র হিসেবে মতে ওই সময় পর্যন্ত ২০১৬ অর্থ বছরের ঠিকাদারদের ৮৪টি প্যাকেজের বিপরীতে কাজ হয়েছিল ৮০ ভাগ। এই বছরের ২৮টি প্যাকেজের মধ্যে ওই সময়ে কাজ হয়েছে ৭০ ভাগ। চলতি বছরের দ্বিতীয় দফার ৪৮টি প্যাকেজে কাজ হয়েছিল ৫০ ভাগ। গত বছরের এবং এ বছরের কোন কাজই শতভাগ হয়নি পাউবো’র রিপোর্ট মতে। এই কারণেই ফসলহানির ঘটনা ঘটে বলে কৃষক ও স্থানীয়দের অভিযোগ। এদিকে সুনামগঞ্জে এ বছর পিআইসিকে প্রায় ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল বলে জানা গেছে। তাদের অনেকেরই বিরুদ্ধে নয়ছয়ের অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, ফসলহানির পরই স্থানীয় কৃষক ও বিভিন্ন পেশাজীবীরা আগাম ফসলহানির ঘটনায় পাউবো, পিআইসি ও ঠিকাদারদের দায়ি করে নানা প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন। এ ঘটনায় সরকারের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করে। পরে সরকার দুদককে অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেয়। শেষ পর্যন্ত গত ২ এপ্রিল পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১৫ কর্মকর্তা ও ৪৬ জন ঠিকাদারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে মামলা দায়ের করে দুদক। এই মামলায় পিআইসির কাউকে আসামি করা হয়নি।
সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ নেতা পাভেল আহমেদ বলেন, সরকার সুনামগঞ্জসহ ৬ জেলার কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে। আমরা অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত পাউবো কর্মকর্তা, ঠিকাদারসহ পিআইসি’র শাস্তি চাই। পিআইসি’র বিরুদ্ধে তদন্ত করে মামলা দেয়া হোক।
সদর উপজেলা যুবলীগের সদস্য ফয়সাল আহমেদ বলেন, অনেক পিআইসি অনিয়ম করেও রেহাই পেয়ে গেছে। তাদের বিরুদ্ধেও মামলা করা উচিত।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ফেরদৌসী সিদ্দিকা বলেন, পিআইসিকে ছাড় দেয়া হলে অনেক দুর্নীতি আড়ালে থেকে যাবে। তারা বাদ পড়লে ‘মিস্টার ২০ পার্সেন্ট’দের বের করা যাবে না।
দুদকের পরিচালক ও হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের দুর্নীতি অনুসন্ধানে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান মো. বেলাল হোসেন বলেন, সরকার আমাদেরকে শুধু সুনামগঞ্জ জেলার হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের দুর্নীতি অনুসন্ধানের দায়িত্ব দিয়েছে। এ জন্য আমরা শুধু সুনামগঞ্জের অভিযুক্তদের বিরুদ্ধেই মামলা দায়ের করেছি। তাছাড়া পিআইসির অভিযোগেরও তদন্ত শুরু হয়েছে বলে তিনি জানান। সরকার যদি অন্য জেলার হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজের দুর্নীতির তদন্তের দায়িত্ব দেয় তাহলে আমরা একই ব্যবস্থা নেব।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com