1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ১১:৪২ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

বাজারে দেশি মাছের সংকট, হাইব্রিডের আগ্রাসন

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৩ মে, ২০১৭
dav

বিশেষ প্রতিনিধি ::
প্রজনন মওসুমে অ্যামোনিয়া গ্যাসে মাছ মারা যাওয়ার প্রভাব এখনো বাজারে লক্ষ করা গেছে। মৎস্যজীবীরা মাছ ধরতে হাওরে নামলেও আগের মতো মাছ মিলছে না। ফলে বাজারে দেশি মাছ কমে গেছে। বেড়েছে নানা প্রজাতির হাইব্রিড মাছের আগ্রাসন। সুস্বাদু দেশি মাছের মূল্যও বেড়ে গেছে বহুগুণ। মাছ না পেয়ে মৎস্যজীবীরাও বিপাকে পড়েছেন।
সুনামগঞ্জ জেলা মৎস্য বিভাগ সূত্রে গেছে, গত ১৫ এপ্রিল থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত হাওরে প্রায় ৫০ মেট্রিক টন মাছ মারা যায়। তবে বেসরকারি হিসেবে মাছের মৃত্যুর পরিমাণ আরো কয়েকগুণ বেশি। মাছ মারা যাওয়ার পর এক সপ্তাহ হাওরে মাছ ধরা ও খাওয়া নিষিদ্ধ করার পর আরো আতঙ্ক তৈরি হয়। এরপর থেকেই হাওরে দেশি মাছের সংকট শুরু হয়। এখন জেলেরা মাছ ধরতে নামলেও মাছ পাচ্ছেন না। ফলে এক সংকটের মুখে পড়েছেন তারা।
সূত্র জানায়, জেলায় ৮৪ হাজার ২৪৮ নিবন্ধিত মৎস্যজীবী রয়েছেন। এর মধ্যে ৪৪ হাজার ৪৪৫ মৎস্যজীবী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। গত ৩০ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুনামগঞ্জের শাল্লায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে পুনর্বাসন সহায়তা দিতে এসে ৫০ হাজার কৃষককে সহায়তার ঘোষণা দেন। এই ঘোষণার পর সম্প্রতি প্রায় ১৮ হাজার কৃষককে সহায়তা কার্ড প্রদান করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে প্রকৃত মৎস্যজীবীদের অনেকেই এই তালিকায় নাম ওঠাতে পারেননি বলে অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, জগন্নাথপুর উপজেলার নলুয়ার হাওরে গত ১৫ এপ্রিল মাছ মরতে শুরু করে। পরদিন থেকে জেলার প্রায় সবগুলো হাওরেই দেশি মাছের মড়ক লাগে। ওইদিন থেকেই প্রশাসন প্রতিটি এলাকায় হাওরের মাছ না খাওয়ার জন্য মাইকিং প্রচারণা চালায়। গত ১৯ এপ্রিল জেলা প্রশাসন হাওরে মাছ ধরার উপর এক সপ্তাহের নিষেধাজ্ঞা জারি করে। মাছের উদ্বেগজনক মহামারির বিষয়টি জাতীয় আলোচনায় চলে আসলে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সুনামগঞ্জে মরা মাছ জলজ জীববৈচিত্র্য ও পানি পরীক্ষা করতে ছুটে আসেন। ময়মনসিংহ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ও নদী কেন্দ্র, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগ, আণবিক শক্তি কমিশন, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও সর্বশেষ কুমিল্লা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য অনুষদের প্রতিনিধি দল সুনামগঞ্জের হাওর পরিদর্শনে এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে। সবাই প্রাথমিক কারণ হিসেবে পচা ধান থেকে অ্যামোনিয়া গ্যাস বৃদ্ধি, অক্সিজেন ও পিএইস কমায় মাছের মৃত্যুর কারণ বলে উল্লেখ করে। সবগুলো প্রতিনিধি দলের রিপোর্টের নমুনা গত ২২ এপ্রিল সংগ্রহ করে আণবিক শক্তি কমিশনের দল। তারা নিজেদের পরীক্ষা ও অন্যান্য পরীক্ষার ফলাফল মিলিয়ে অ্যামোনিয়া বৃদ্ধি, অক্সিজেন ও পিএইস কমে আসার কথা জানিয়ে হাওরে ইউরোনিয়ামে মাছ মরার কোন কারণই নেই বলে জানায়। এরপর থেকে এখনো হাওরের সুস্বাদু মাছ নিয়ে ভীতি রয়ে গেছে।
ওয়েজখালি মাছ বাজারের পুরনো ব্যবসায়ী মকরম আলী বলেন, ‘এখন মাছছুয়ারা আউরে গিয়া মাছ মারতো পারেনা। ইতার লাগি বাজারও দেশি মাছ নাই। এখন খালি হাইব্রিড মাছ। দেশি মাছ কম থাকায় দাম অনেক বেশি। কিনরোয়া মানুষ ইতার লাগি দেশি মাছ কিনতো চায়না।
সদর উপজেলার গোয়াছড়া গ্রামের মৎস্যজীবী আবু তাহের বলেন, মাছ ধইরা খাই। ইবার মাছ পায়রাম না। সারাদিন জাল বাইয়াও এক কুছি ছাউল কিনতাম পারিনা। খুব কষ্টে আছি। এই মৎস্যজীবী জানান, নিবন্ধিত মৎস্যজীবীর তালিকায় তার নাম নাই। এভাবে প্রকৃত মৎস্যজীবীদের বদলে মাছ ব্যবসায়ীরা তালিকায় অন্তর্ভুক্তি হয়েছেন বলে তিনি জানান।
সুনামগঞ্জ মাছ বাজার সমিতির সভাপতি সহিবুর রহমান বলেন, বাজারে দেশি মাছ না আসায় ব্যবসায়ীরাও সমস্যায় পড়েছেন। কারণ মানুষ দেশি মাছ খেতে চায়। মাছ না পাওয়ায় অনেকে খালি হাতেই ফিরে যান।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রঞ্জন কুমার দাস বাজারে দেশি মাছের অভাব রয়েছে স্বীকার করে বলেন, সরকার ইতোমধ্যে আমাদের জেলায় মৎস্যপোনা অবমুক্তকরণের জন্য ৬০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। আমরা এই মাসের শেষদিক থেকেই মাছ ছাড়া শুরু করব। তাছাড়া সরকারি সহায়তা মৎস্যজীবীদের হাতে তুলে দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com