স্টাফ রিপোর্টার ::
দক্ষিণ ছাতকে পৃথক ঘটনায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে সংঘর্ষে ১ জনের মৃত্যু ও সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে স্ট্রোক করে মারা গেছেন আরেকজন। সন্ধ্যায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে চরমহল্লা ইউনিয়নের ভল্লবপুর গ্রামে দুই ভাইয়ের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। দুই পৃথক ঘটনায় হতাহতের পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, জাউয়া বাজারের নদী তীর সংলগ্ন পানবাজার এলাকায় কয়েকটি দোকানে গত ৪০ বছর ধরে আব্দুল কাইয়ুম, আব্দুল কাহারসহ হাবিদপুর গ্রামের কয়েকজন ব্যবসা করছেন। এ জায়গা নিয়ে বাজার সংলগ্ন কোণাপাড়া গ্রামের প্রভাবশালী আব্দুল ওয়াদুদের লোকজনের সঙ্গে বিরোধ চলছে। বৃহস্পতিবার সকালে এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে জাউয়া বাজার পুলিশ ফাঁড়ির সামনে সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে সংঘর্ষে জড়ায় দুই পক্ষ। সংঘর্ষে হাবিদপুর গ্রামের আব্দুল কাইয়ুমের ছেলে হাফিজ আবু সাঈদ (৩০) গুরুতর আহত হন। সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে বিনন্দপুর গ্রামের সুলতান মিয়া (৫৫) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত আরো ২০ জন আহত হন। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৩ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।
গুরুতর আহত হাফিজ আবু সাঈদকে স্থানীয় কৈতক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে যাওয়ার পথে মারা যান আবু সাঈদ। সংঘর্ষের পর পুলিশ কোণাপাড়া গ্রামের জমির মিয়া, মনির উদ্দিন, আজাদ মিয়া, আব্দুল মনাফ, কদরিছ আলী, হেলাল মিয়া ও আব্দুল গফুরকে গ্রেফতার করে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ বরকতুল্লাহ খান। হতাহতের ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় থানা পুলিশ। এ ঘটনায় এখনো এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ছাতক থানার ওসি মো. আতিকুর রহমান জানান, বাজারের ভূমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে একজন নিহত ও সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে এক শালিসী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ ৩ রাউন্ড টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ ঘটনায় ৭জনকে আটক করা হয়েছে।
অন্যদিকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একই উপজেলার চরমহল্লা ইউনিয়নে বিদ্যুতায়িত হয়ে ওয়েলডিং কারখানায় কর্মরত দুই ভাই মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৭টায় উপজেলার ভল্লবপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ভল্লবপুর গ্রামের জমির আলীর একটি ওয়েলডিং কারখানা রয়েছে স্থানীয় বাজারে। সেখানে কাজ করেন তার দুই সন্তান হুমায়ূন আহমদ (৩০) ও মামুন আহমদ (২২)। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে গ্রামের সিরাজ মিয়া মেম্বারের বাড়িতে স্টিলের দরোজা জানালা ফিটিংয়ের কাজ করছিলেন এই দুই ভাই। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তারা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় কৈতক উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে আসা হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি মো. আতিকুর রহমান বলেন, কাজ করার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ওয়েলডিং কারখানায় দুই ভাই মারা গেছেন। তাদের লাশ কৈতক উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।