ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক পরিবারকে দেয়া সরকারের বিশেষ ভিজিএফ চাল ও টাকা বিতরণে অনিয়ম এবং স্বজনপ্রীতির অভিযোগ করায় বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে দিরাই পৌরসভার মেয়র মোশাররফ মিয়ার ছেলের নেতৃত্বে এক কৃষককে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত আহত কৃষক ফয়েজ উদ্দিন দিরাই পৌরসভার চণ্ডিপুর গ্রামের মৃত আব্দুর রহিমের ছেলে। উপর্যুপরি মারপিটে মাথায় গুরুতর আঘাত পাওয়ায় তাকে দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এরপর অবস্থার অবনতি হলে তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ বিষয়ে দৈনিক সুনামকণ্ঠে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সংবাদপাঠে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে হাওরে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের জন্য বরাদ্দ ভিজিএফের চাল ও নগদ টাকা বিতরণে পৌর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ এনে দিরাই শহরে মিছিল করেন চ-িপুর গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ দেন তারা। মিছিল থেকে ফেরার পথে পৌরসভার মেয়র মোশাররফ মিয়ার ছেলে উজ্জ্বল মিয়ার নেতৃত্বে একদল যুবক কৃষক ফয়েজ উদ্দিনের পথরোধ করে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।
নিজ পুত্রের এই ঘটনা আড়াল করতে দিরাই পৌরসভার মেয়র মোশাররফ মিয়া জানান, আমরা সরকারের নীতিমালা মেনে প্রকৃত গরীব মানুষকে সহায়তা দিচ্ছি। কেউ কেউ সরকারি সহায়তা বিতরণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে মিছিল ও স্মারকলিপি দেয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে ছাত্রলীগ, যুবলীগের ছেলেরা যদি কিছু করে সেই দায়িত্ব আমি নিতে যাব কেন। পেটানোর ঘটনায় তার ছেলেদের জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।
এভাবে ছাত্রলীগ, যুবলীগের ছেলেদের উপর ঘটনার দায়ভার ছেড়ে দিয়ে নিজের পুত্র জড়িত থাকার বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চান দিরাই পৌর মেয়র মোশাররফ মিয়া।
ক্ষতিগ্রস্ত ও ফসলহারা কৃষকরা তাদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে মিছিল সমাবেশ করে অভিযোগ দিতেই পারেন, তাই বলে এভাবে কৃষককে পেটানো হবে কেন। নিজের ‘ক্ষমতা’ জাহির করতে এবং অনিয়মকে আড়াল করতেই এই হামলা চালানো হয়েছে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। আমরা এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই। ন্যাক্কারজনক ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত করা হোক এই দাবি জানাই। যাতে আগামীতে এমন ঘটনা আর না ঘটে।