সুনামগঞ্জ জেলায় একের পর এক ঘটে যাওয়া দুর্যোগে মানুষ এখন জীবন জীবিকার সংকটে দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছেন। হাওরে তলিয়ে গেল ধান, অ্যামোনিয়া গ্যাসে হাওর নদীতে ভেসে গেল মাছ। এখন হাওর ও নদীতে বিরাজ করছে মাছের আকাল। জীবিকার তাগিদে ফসলহারা কৃষকরা বিকল্প যে কর্মসংস্থানটি বেছে নিয়েছিলেন, তা হল হাওর ও নদীতে মাছ শিকার। মানুষ দিনরাত বৃথা কষ্ট করে হাওর বা নদীতে মাছ না পেয়ে বাড়ি ফিরছেন খালি হাতে। তাছাড়া কালবৈশাখীর তা-বে অনেক ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মানুষ দুর্বিষহ জীবনে পতিত হয়েছেন।
পাউবো’র বালির বাঁধ ভেঙে জেলার হাওরগুলোর বোরো ধান তলিয়ে যায়। কাঁচা ধানগাছ পচে গিয়ে পানিতে অ্যামোনিয়া গ্যাসের সৃষ্টি হয়। এ অ্যামোনিয়া গ্যাসে আক্রান্ত হয়ে হাওর ও নদীতে মাছের মড়ক দেখা দেয়। ফলে হাওর নদী মাছ শূন্য হয়ে যায়। মৎস্য অধিদপ্তরের মতে, সুনামগঞ্জ জেলায় প্রতি বছর ৮৯ হাজার টন মাছ উৎপাদিত হয়ে থাকে। জেলার চাহিদা রয়েছে ৫৪ হাজার টন। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত থাকে ৩৫ হাজার টন। মাছ শিকার করতে না পারায় সংসার চালাতে পারছেন না কৃষক-জেলে পরিবার। বর্ষা মৌসুমে মা মাছগুলো ডিম দেয়ার কথা, কিন্তু ডিমওয়ালা মাছ সব বিষক্রিয়ায় মরে যাওয়াতে মাছের ঘাটতি পূরণ করা অসম্ভব হয়ে উঠেছে। বিজ্ঞজনের অভিমত, সরকার জরুরি ভিত্তিতে পোনা মাছ এনে জেলার হাওর ও নদীতে ছাড়তে হবে। মাছের উৎপাদন বাড়াতে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
জেলায় একের পর এক ঘটে যাওয়া দুর্যোগে মানুষের জীবন-জীবিকায় যে সংকট দেখা দিয়েছে, তা নিরসনে সরকার ইতিমধ্যে যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন, সেটার বাস্তবায়নের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।