সুনামগঞ্জে ফসলহানি এবং ক্রমান্বয়ে দুর্যোগের ঘটনায় কৃষি অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়েছে। এখন হাওরে ধান নেই, জলাশয়ে মাছ নেই। শুধু তাই নয়, পাশাপাশি পরিবেশ ও জলজ জীববৈচিত্র্যের ক্ষেত্রেও বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফলে জেলার কৃষি অর্থনীতি এখন চরম হুমকিতে আছে। হাওরাঞ্চল প্লাবিত হয়ে আধাপাকা ও কাঁচা বোরো ধান হাওরের পানি দূষণে পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে মাছ মারা গেছে।
কৃষি অর্থনীতির বিশাল ভা-ার এখন শূন্য। খাদ্য সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে আছে খাদ্য উদ্বৃত্ত এলাকার প্রায় সাড়ে তিন লাখ কৃষক পরিবার। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, জেলায় এ বছর দুই লাখ ২৩ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধরনের আবাদ হয়েছিল। ফলনও হয়েছিল ভালো। এতে করে প্রায় ৮ লাখ ৪৩ হাজার টন চাল পাওয়া যেত এই পরিমাণ ধান থেকে যার আর্থিক মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ৩৪ হাজার ১৬ কোটি টাকা। এই অঞ্চলের প্রধান খাদ্য শস্যের পাশাপাশি পরিবেশ, মাছ, গবাদি পশুসহ জলজ জীববৈচিত্র্যের ও অনিশ্চয়তার মধ্যে চাষাবাসে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। এসব কারণে হাওরের কৃষি অর্থনীতি এখন সংকটের মুখে।
হাওরের গঠন, জীববৈচিত্র্য ও বিশাল সম্পদের কারণে স্থায়ীভাবে বিশেষ গুরুত্ব রাখে। কিন্তু বরাবরই এই সম্ভাবনাময় অর্থনৈতিক অঞ্চলটি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ বছরও দৃশ্যমান ক্ষতির পাশাপাশি অদৃশ্য পরিবেশ ও জলজ জীব বৈচিত্র্যের বিশাল ক্ষয়ক্ষতি হবে।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে বলা হয়েছে, সুনামগঞ্জ আমন বোরো মিলিয়ে প্রতি বছর প্রায় ৯ লাখ ৭৬ হাজার ১৯৭ টন খাদ্য শস্য উৎপাদিত হয়ে থাকে। জেলার চাহিদা মাত্র চার লাখ ১৪ হাজার ৬১৫ টন। প্রতি বছর উদ্বৃত্ত থাকে প্রায় পাঁচ লাখ ৪০ হাজার ৩৪৯ টন। যা দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়। কিন্তু এবার এই বিপর্যয়ে সুনামগঞ্জ জেলায় কৃষি অর্থনীতি বিরাট হুমকির মুখে পড়বে। কৃষক এই দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে সরকারকে অবশ্যই সার্বিক সহযোগিতা করতে হবে আন্তরিকভাবে। আমরা বিশ্বাস করি, সুনামগঞ্জবাসীর পাশে আছেন উন্নয়নের সরকার। জলজ জীববৈচিত্র্য ও খাদ্য সংকট মেটাতে সর্বাত্মক ব্যবস্থাগ্রহণ করবেন এটাই কাম্য।