জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ::
ছাতকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩টি হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে ১০ সহ¯্রাধিক হেক্টর বোরো ফসলের পুরোটাই তলিয়ে গেছে। হাওর রক্ষা বাঁধ সংস্কার কাজে এ মৌসুমে প্রায় ১৯ লক্ষ টাকা সরকারি বরাদ্দ দেয়া হলেও সিকি ভাগ কাজ হয়নি বলে হাওর পাড়ের কৃষকরা অভিযোগ তুলেছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক জাউয়াবাজার ইউনিয়নের দেখার হাওর, নোয়ারাই ইউনিয়নের নাইন্দার হাওর ও সিংচাপইড় ইউনিয়নের চাউলির হাওর রক্ষায় বেড়িবাঁধ সংস্কারে প্রতিবছরই লক্ষ-লক্ষ টাকা সরকারি বরাদ্দ দেয়া হয়ে থাকে। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীর এবং ঠিকাদার ও পিআইসি’র যোগসাজশে নামমাত্র কাজ করে প্রতিবছর সরকারি বরাদ্দের সিংহভাগ টাকা ভাগ-বাটোয়ারা করে নিয়ে যাচ্ছে তারা।
এদিকে কৃষকের কষ্টার্জিত ফসল রক্ষার বিষয়টি তোয়াক্কা না করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অসাধু কর্মকর্তাদের সাথে তাল মিলিয়ে অসাধু ঠিকাদাররাও দায়সারা কাজের মাধ্যমে সরকারি টাকা আত্মসাত করে যাচ্ছে। কৃষকদের অভিযোগ, বেড়িবাঁধ নির্মাণের নামে প্রতি বছরই সরকারি লক্ষ-লক্ষ টাকা হরিলুট হচ্ছে এখানে। ফলে হাওর রক্ষা বাঁধের কারণে ফসল হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন এ অঞ্চলের কৃষক। কিন্তু লুটপাটকারীরা থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। চলতি ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে হাওর সমূহে সুনামগঞ্জ হাওর উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক কাবিটা প্রকল্পের আওতায় ফসল রক্ষা বাঁধ মেরামত কাজ বাস্তবায়নে ১৮লক্ষ ৯৬ হাজার ১৩৩ টাকা সরকারি বরাদ্দ দেয়া হয়। উপজেলার নাইন্দার হাওরের বিছনাইড় পাড় থেকে লক্ষ্মীবাউর খাল পর্যন্ত ০.১৪০ কিমি বাঁধ মেরামত ও বাঁধ ভাঙা বন্ধকরণ কাজে বরাদ্দ দেয়া হয় ৭লক্ষ ৭৬ হাজার ২১৯ টাকা। এ বাঁধ রক্ষায় সিকি ভাগ কাজও এ বছর হয়নি বলে স্থানীয় কৃষকরা অভিযোগ তুলেছেন। দেখার হাওরের দু’টি অংশে পৃথক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। জাউয়াবাজার ইউনিয়ন অংশের মাছুখালি থেকে ঘইড়ডুবা পর্যন্ত ০.১৫০ কি.মি. হাওর রক্ষা বাঁধ মেরামত ও বাঁধ ভাঙা বন্ধকরণ কাজে বরাদ্দ দেয়া হয় ৩ লক্ষ ৭১ হাজার ৬০৯ টাকা, চরমহল্লা ইউনিয়নের অংশে কামরাঙ্গী, চরদুর্লভ ও চরবাড়ণ্ডকা পর্যন্ত ০.২৬৭ কি.মি. বাঁধ মেরামত ও বাঁধ ভাঙা বন্ধকরণ কাজে বরাদ্দ দেয়া হয় ৪লক্ষ ৯৪ হাজার ২৯৪ টাকা এবং সিংচাপইড় ইউনিয়নের চাউলির হাওর রক্ষা বাঁধ মেরামত ও বাঁধ ভাঙা বন্ধকরণ কাজে ২ লক্ষ ৫৪ হাজার ১১ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু এসব হাওর রক্ষা বাঁধ মেরামত না করা ও নামে মাত্র মেরামতের কারণে হাওরের ১০সহ¯্রাধিক বোরো ফসল বৃষ্টি ও ঢলে তলিয়ে গেছে। স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ এসব হাওর রক্ষা বেড়িবাঁধে শতকরা ৫ ভাগ কাজও সম্পন্ন করা হয়নি।