স্টাফ রিপোর্টার ::
হাওরের বোরো ফসল ডুবির ঘটনায় বাঁধ নির্মাণকাজে অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে আন্দোলন জোরদার হচ্ছে। গতকাল শনিবারও বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলন। সংগঠনটির ডাকা ১৩ এপ্রিল সমাবেশ ও পাউবো অফিস ঘেরাও কর্মসূচিটি কৃষক-জনতার মাঝে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে।
কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শনিবার বিকেলে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শহরের ওয়েজখালি পয়েন্ট, মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের বেতগঞ্জ বাজার ও ইছাগড়ি বাজারে পৃথক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ওয়েজখালি পয়েন্টে হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক বিজন সেন রায়ের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব বিন্দু তালুকদারের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সদস্য জেলা সিপিবির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. এনাম আহমেদ, সমাজসেবক আতাউর রহমান, নাট্যকর্মী রাজু আহমদ, ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মো. রইসুজ্জামান, সাংবাদিক একে কুদরত পাশা, জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি তারেক চৌধুরী, সংস্কৃতিকর্মী প্রদীপ পাল প্রমুখ।
বিকেলে ইছাগড়ি বাজারে স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সন্ধ্যায় বেতগঞ্জ বাজারে স্থানীয় সমাজসেবক লিলু মিয়ার সভাপতিত্বে পৃথক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। পৃথক সমাবেশে বক্তব্য রাখেন হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান, সাবেক ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান, সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল কুদ্দুছ, সংগঠনের সদস্য রুহুল আমিন, শাহাব উদ্দিন, সালেহীন চৌধুরী শুভ, এমরানুল হক চৌধুরী, আমিনুল হক, গাজী আফজাল, জেলা যুবজোটের সভাপতি এইচ এম জাকারিয়া সুমন।
পৃথক সমাবেশে বক্তারা বলেন, সুনামগঞ্জে হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ নির্ধারিত সময়ে না হওয়ায় এবং কাজে ব্যাপক অনিময়-দুর্নীতি হওয়ার কারণে বাঁধ ভেঙে জেলার ৯০ভাগ বোরো ধান তলিয়ে গেছে। জেলার লাখ লাখ ফসলহারা কৃষক এখন দিশেহারা। ফসলহারা কৃষকদের বাঁচাতে সুনামগঞ্জকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করতে হবে। একই সঙ্গে আগামী এক বছর সুনামগঞ্জে খোলা বাজারে চাল বিক্রি এবং ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মধ্যে ভিজিডি ও ভিজিএফ কার্ড বিতরণ করাসহ তাদের সকল কৃষিঋণ মওকুফ করতে হবে।
উল্লেখ্য, জেলায় এ বছর দুই লাখ ২৩ হাজার ৮৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছিল। বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২৬৩৪ কোটি টাকা। পানি উন্নয়ন বোর্ড হাওরের এই ফসল রক্ষায় ৫৮ কোটি ৭২লাখ টাকা ব্যয়ে ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করছে। কৃষকদের অভিযোগ, বাঁধের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ না হওয়া এবং কাজে অনিয়মের কারণেই হাওরে এই অসময়ে ফসলহানি ঘটেছে। ইতোমধ্যে ভারী বৃৃষ্টিপাত, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ফসলরক্ষা বাঁধ ভেঙে বোরো ধান তলিয়ে গেছে।