1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৬:৫৩ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

পাউবোর ‘বালির বাঁধ’ ভেঙে ফসলহানি : তিন নেতা যা বললেন

  • আপডেট সময় রবিবার, ৯ এপ্রিল, ২০১৭

বিশেষ প্রতিনিধি ::
সুনামগঞ্জে টানা বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে পাউবোর ‘বালির বাঁধ’ ভেঙে তলিয়ে গেছে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার হেক্টর জমির বোরো ফসল। প্রতিদিন ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে। হাওরপাড়ের গ্রামগুলোতে শুরু হয়েছে হাহাকার। দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট। হাতে টাকা না থাকায় চাল-ডাল কিনে খেতে পারছেন না ফসলহারা কৃষকরা। এমন অবস্থায় সুনামগঞ্জের বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলো সুনামগঞ্জ তথা হাওরাঞ্চলকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি জানিয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, বিরোধীদল জাতীয় পার্টি ও দেশের অন্যতম বৃহৎ দল বিএনপি’র নেতারা বলছেন এ মুহূর্তে হাওরের কৃষকদের বাঁচাতে হলে দুর্গত এলাকা ঘোষণার বিকল্প নেই। পাশাপাশি তারা দুর্নীতিবাজ পাউবো কর্মকর্তা, ঠিকাদার, পিআইসি’র শাস্তি দাবি করেছেন।
গতকাল শনিবার জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক ও দিরাই-শাল্লার সাবেক এমপি নাছির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, সুনামগঞ্জ জেলার মানুষ একটিমাত্র বোরো ফসলের উপর নির্ভরশীল। এ জেলার কৃষকরা বোরো ফসলকে সামনে রেখেই স্বপ্ন দেখেন আগামী সোনালী দিনের। এ ফসলের উপর নির্ভর করেই নিজের সংসারের বাজেট তৈরি করেন। এ ফসলের টাকায় ছেলে-মেয়ের স্কুলের বেতন, মা-বাবার চিকিৎসাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহ করেন। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় জেলার গুটিকয়েক মানুষ নিজ স্বার্থের জন্য সুনামগঞ্জের কৃষকদের সর্বনাশ করেছে। ডিসেম্বর মাসের বাঁধের কাজ ফেব্রুয়ারিতেও শুরু হয়নি। ফলে কিছু বাঁধে যে মাটি ফেলা হয়েছিল চৈত্র মাসের বৃষ্টির জলে তা বিলীন হয়ে কৃষকের স্বপ্ন শেষ করে দিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা, ঠিকাদার ও স্থানীয় এমপিদের মনোনীত প্রতিনিধির মাধ্যমে পিআইসি গঠন করে সে বরাদ্দ হরিলুট করা হয়েছে। কৃষকদের বাঁচাতে দুর্গত এলাকার ঘোষণা বিকল্প নেই।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার কৃষকবান্ধব সরকার এবং জনগণের সরকার। এ বছর পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিতে সুনামগঞ্জের কৃষিখাত ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমি কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী’র সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সুনামগঞ্জের সার্বিক বিষয় তোলে ধরেছি। সরকার ইতিমধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। ন্যায্য মূল্যে চাল বিক্রি, আগামীতে বিনামূল্যে সার বিতরণ এবং ঋণ মওকুফের বিষয়ে মাননীয় মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। আগামী এক বছরের জন্য জলমহালগুলো উন্মুক্ত করে দেয়ার কথা বলেছি। যাতে করে কৃষকরা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহী করতে পারে। ব্যারিস্টার ইমন বলেন, আমরা অনেক আগেই পানিসম্পদ মন্ত্রীকে প্রতি বছর ফসলহানির বিষয়টি অবগত করেছিলাম। আমি মনে করি, ফসলহানির বিষয়ে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অবহেলা আছে। যাদের গাফিলাতির কারণে ফসলহানি হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রত্যেকটি ইউনিটের আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে বাঁধে এবং কৃষকদের পাশে থাকার জন্য বলা হয়েছে। আমি নিজেও বিভিন্ন হাওর পরিদর্শন করছি। আমরা একটি সমাবেশের আয়োজন করবো কয়েক দিনের মধ্যে। যেখানে কৃষকদের সমস্যা ও দাবি শুনবো। আশা করছি ১১ তারিখই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে বিষয়গুলো উনাকে অবহিত করবো।
জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক ও সুনামগঞ্জ ৪ আসনের (সদর-বিশ্বম্ভরপুর) এমপি অ্যাডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ বলেন, আমাদের সুনামগঞ্জ জেলায় এ বছর প্রায় ২ লাখ ৩০হাজার হেক্টর বোরো আবাদ হয়েছে। সুনামগঞ্জে হচ্ছে একমাত্র বোরো ফসলি এলাকা। এই ফসলের জন্যই সারা বছর কৃষকরা তাকিয়ে থাকে। কিন্তু এ বছর অতিবৃষ্টি, পাহাড়ি ঢল এবং বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে আগাম বন্যা আসার সাথে হাওরের ফসল তলিয়ে গেছে। অধিকাংশ ফসল এখন পানির নিচে। কৃষকদের মধ্যে এখন হাহাকার চলছে। আমাদের দাবি হচ্ছে, কৃষকদের বাঁচাতে হবে, এই সুনামগঞ্জকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করতে হবে এবং বাঁধ নির্মাণের অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করতে হবে। যা ইতিমধ্যে আমরা সমাবেশের মাধ্যমে জানিয়েছি। এমপি মিসবাহ আরো বলেন, সুনামগঞ্জের কৃষদেরকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে খোলা বাজারে ন্যায্য মূল্যে বিক্রির জন্য দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কৃষকদের গত বছরও হাওরের অধিকাংশ ফসল ঘরে তুলতে পারেন নি, টানা দু’বছরের ফসলহানির কারণে কৃষকরা সর্বস্বান্ত, ঋণগ্রস্ত অবস্থায় আছেন। কৃষকদের যে ঋণ আছে তা আদায় বন্ধ রেখে, তাদের নতুন করে ঋণ দিতে হবে। যাতে করে তারা আগামী বছর ফসল করতে পারে, নিজেরা টিকে থাকতে পারে। এ বছর প্রচুর শিলাবৃষ্টিতে ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের ঢেউটিন দিতে হবে, যাতে করে মানুষ মাথা গোঁজার ঠাঁই পায়। এছাড়া ১০টাকা দরে ন্যায্য মূল্যের চাল এ মাসে বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা। আমি এ বিষয়ে খাদ্যমন্ত্রীর কাছে ডিও লেটার দিয়ে বলেছি, সুনামগঞ্জ জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ কারণে এই চাল বিক্রি যেন বন্ধ না হয়। ক্ষতিগ্রস্তদেরও যেন চাল ক্রয়কারীদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com