এখনো বৈশাখ আসেনি। চৈত্র মাসের অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের প্রথম ধাক্কায় পাউবোর ‘বালির বাঁধ’ ভেঙে তলিয়ে গেছে কৃষকের স্বপ্ন-সাধ। ফসলহারা কৃষকের ঘরে আজ বৈশাখীর আবহ নেই। নেই নতুন ফসলের ঘ্রাণ। হাওরের বুকজুড়ে আজ শুধু হাহাকার। কিন্তু এমন হবার কথা তো ছিল না।
কৃষক বুকভরা আশা নিয়ে প্রতি বছর বোরো আবাদ করেন। কিন্তু বার বার ফসল রক্ষার নামে ‘বালির বাঁধ’ নির্মাণ করা হয়। এই নড়বড়ে বাঁধ ভেঙেই তলিয়ে যায় কৃষকের স্বপ্ন। কী দুর্ভাগ্য আমাদের। কিন্তু এর জন্য দায়ী কে? হলফ করে বলা যায়, এই বাঁধ নির্মাণ কাজে জড়িত দুর্নীতিবাজ পাউবো কর্মকর্তা, ঠিকাদাররাই এর জন্য দায়ী। তারা প্রতিবছর সুনামগঞ্জবাসীর ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে। প্রতি বছর গুটি কয়েক দুর্নীতিবাজদের জন্য আমাদের হাজার হাজার কোটি টাকার ফসল তলিয়ে যায়। এদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হলেও শাস্তি হয় না। এই শাস্তি না হওয়ার কারণেই দুর্নীতিবাজরা হয়ে উঠে বেপরোয়া। ফসল রক্ষা বাঁধের নামে রীতিমতো চালায় লুটপাট। তবে এবার সময় এসেছে জবাব দেয়ার। সুনামগঞ্জের কৃষক-জনতা দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন, আন্দোলন করছেন, প্রতিবাদ করছেন। তাদের সাথে একাত্মতা পোষণ করেছেন রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন। জোরালো হচ্ছে আন্দোলন।
সবার বিবেকের সামনে একটি প্রশ্ন, ফসলহারা মানুষ এখন কী খাবে, কোথায় যাবে। কিন্তু এর কোনো উত্তর নেই। সরকারের কাছে বরাবরের মতো এবারো দাবি জানাই, সুনামগঞ্জকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করুন। বাঁধ নির্মাণকাজে জড়িত দুর্নীতিবাজদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনুন। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিন। যাতে করে মানুষের ভাগ্য নিয়ে ওইসব দুর্নীতিবাজরা ভবিষ্যতে ছিনিমিনি খেলার সাহস না পায়। আমরা হাওরবাসীর মুখে তৃপ্তি ও স্বস্তির হাসিই দেখতে চাই, আর আহাজারি শুনতে চাই না।