1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৯:৪৬ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

অধরাই থাকছে বিএনপির সংস্কারপন্থি ইস্যু

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৬ এপ্রিল, ২০১৭

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
হঠাৎ আলোর ঝলকানি দিয়ে থেমে গেছে বিএনপির সংস্কারপন্থি নেতাদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া। দলের মধ্যে কট্টরপন্থি হিসেবে পরিচিত এবং নীতিনির্ধারকদের চিরায়ত ‘ধীরে চলো’ নীতির কারণেই দীর্ঘ দশ বছরের বেশি সময় ধরে বাইরে থাকা প্রভাবশালী নেতাদের ফিরিয়ে আনার কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। যে কারণে কথিত সংস্কারপন্থি হিসেবে পরিচিত নেতারা হতাশ হয়ে পড়ছেন।
বিএনপি’র দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ১০ বছর আগে দলে সংস্কার প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিভক্তির রেখা মুছে ফেলার উদ্যোগ নেয় দলটির হাইকমান্ড। দলের কট্টরপন্থিদের বিরোধিতার পরেও সংস্কারপন্থি হিসেবে বহুল আলোচিত নেতাদের দলে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া হিসেবে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে দলের সাবেক দুই সংসদ সদস্য সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুল ও জহির উদ্দিন স্বপনকে গুলশান কার্যালয়ে ডেকে কথা বলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। অতীতের সকল ভেদাভেদ ভুলে তাদের ঐক্যবদ্ধভাবে দলের জন্য কাজ করতে বলেছেন তিনি। পর্যায়ক্রমে সংস্কারপন্থি অন্য নেতাদেরও ডাকা হবে এমন ইঙ্গিতও দেয়া হয়েছিলো ওই সময়ে।
দলের নীতিনির্ধারকদের এমন মনোভাবে একদিকে যেমন নেতাকর্মীদের মাঝে উচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হয়, তেমনি দলের বাইরে থাকা একসময়ের হেভিওয়েট নেতারাও এক টুকরো আশার আলো দেখতে পেয়েছিলেন। কিন্তু দলের অন্যান্য যে কোন কার্যক্রমের মতো এ সিদ্ধান্তটিও থমকে গেছে। কবে কখন অন্যান্য নেতাদের দলে ফিরিয়ে আনা হবে তা এখন কেউ বলতে পারছেন না। এরপরও তারা যোগাযোগ রাখছেন বিএনপির হাইকমান্ডের সাথে। এমন নাজুক পরিস্থিতিতে তাদের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে আলোচনাও চলছে দলটির অভ্যন্তরে। এরপরও ফলপ্রসূ কোন সম্ভাবনা দেখা না গেলে যে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরিকল্পনা নিয়েও এগোচ্ছেন সংস্কারপন্থি একাধিক নেতা। এমনটাই জানা গেছে ঐ সকল নেতাদের সাথে আলাপকালে।
জানা গেছে, ১/১১ রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ২০০৭ সালের ২৫ জুন তৎকালীন বিএনপি মহাসচিব আবদুল মান্নান ভুঁইয়া দলের অভ্যন্তরে ১৫ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিলে এর প্রতি দলের ১২৭ জন সাবেক মন্ত্রী-সাংসদ তাকে সমর্থন দেন। তখন থেকে ওই অংশটি ‘সংস্কারপন্থি’’ বলে বিএনপিতে চিহ্নিত। সংস্কার প্রস্তাবের পর খালেদা জিয়া গ্রেপ্তারের পূর্ব মুহূর্তে দলের মহাসচিব আবদুল মান্নান ভুঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব আশরাফ হোসেন, দপ্তর স¤পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তিকে বহিষ্কার করেন। সেসময় দলের মহাসচিব হিসেবে নিয়োগ পান প্রয়াত খন্দকার দেলোয়ার হোসেন। ওয়ান ইলেভেন পরবর্তী রাজনৈতিক পটপরিবর্তন আর নানা চাড়াই-উৎরাইয়ের মধ্যেও বিএনপিকে ছেড়ে যাননি একসময়ে দলের গুরুত্বপূর্ণ এসব নেতৃবৃন্দ। এরপর সবাইকে নিয়ে কমিটি হবে, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার এমন আশ্বাস বাস্তবায়নের অপেক্ষায় ছিলেন সংস্কারপন্থী নেতারা। কিন্তু গত বছর দলের ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল শেষে ৬ আগস্ট কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণাতে তাদের কাউকে অন্তর্ভুক্ত না করায় আশাহত হন তারা। এরপরেও তারা চেষ্টা করে গেছেন দলে কাজ করার জন্য। এর অংশ হিসেবে দলের চেয়ারপারসন সংস্কারপন্থি হিসেবে পরিচিত দুই নেতাকে গুলশান কার্যালয়ে ডেকে একটি সিগন্যাল দেন- অন্যান্যদেরকেও তিনি দলে অন্তর্ভুক্ত করবেন। কিন্তু এবারও কট্টরপন্থি হিসেবে পরিচিত দলের একটি ক্ষুদ্র অংশের প্রবল আপত্তির মুখে সেই সিদ্ধান্ত থেকেও অনেকটা পিছু হটতে হয়েছে খালেদা জিয়াকে। এমনটাই জানিয়েছেন দলের একটি সূত্র।
সংস্কারপন্থি ইস্যুতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, সংস্কারপন্থীরা অন্য দলে যাননি। এমনকি ২০০৮ সালের নির্বাচনেও তারা দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে চলেছেন। ২০০৯ সালের কাউন্সিলের পর সংস্কারপন্থী কিছু নেতাকে দলে নেওয়া হলেও বাকিদেরকে এবার নেওয়া হয়নি। ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে তেমনটা না হলেও পরবর্তীতে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তাদের সাথে কথা বলেছেন। অন্যান্য যারা রয়েছেন তাদের সঙ্গেও দলের হাইকমান্ডের কথা বলা উচিত।
সংস্কারপন্থী অংশের এক নেতা অনেকটা ক্ষোভ এবং হতাশার সুরে বলেন, আমরা ২০০৯ সালের কাউন্সিলের পর থেকে অপেক্ষা করছি। এর মধ্যে সুযোগ পেলেও ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে হাত মিলাইনি। গত কমিটির মতো এবারও আমাদেরকে জায়গা দেওয়া হয়নি। আবার হঠাৎ করে চেয়ারপারসন আমাদের মতো দুইজন নেতাকে ডাকলেন, কথা বললেন, আশ্বস্ত করলেন। কিন্তু সেই প্রক্রিয়াটা এখন আবার বন্ধ হয়ে গেছে। তিনি বলেন, আমাদের অপরাধটা কি? আর কত অপেক্ষা করতে হবে। আমরা কি মরে গিয়ে প্রমাণ করব যে, আমরা খালেদা জিয়া নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আছি।
সূত্র জানায়, দলের নীতিনির্ধারকদের মধ্যে ‘উদারপন্থি’ হিসেবে পরিচিত একটি অংশ সংস্কারপন্থিদের দলে ফিরিয়ে আনার পক্ষে মনোভাব পোষণ করলেও ‘কট্টরপন্থি’’ হিসেবে পরিচিত একটি ক্ষুদ্র অংশ তার বিরোধিতা করছে। দলের ভিতর এ অংশটির প্রভাব কমে আসলেও চেয়ারপারসনের গুড বুকে থাকার কারণে তারা প্রভাব বিস্তার করতে পারছেন বলে জানা যায়।
সংস্কারপন্থিদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব পোষণকারী শীর্ষ নেতাদের মধ্যে রয়েছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, নজরুল ইসলাম খান, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, সাদেক হোসেন খোকাসহ দলের অনেক কেন্দ্রীয় নেতা। আর এখনও সংস্কারপন্থিদের দলে ফিরিয়ে আনার বিপক্ষে আগের অবস্থানে অনড় থাকা দলের ক্ষুদ্র অংশটির মধ্যে রয়েছেন, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ প্রমুখ।
উদারপন্থি হিসেবে পরিচিত এমন এক নেতা নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, বলা যাচ্ছে না, অন্য দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতেই এখন একটি অংশ তৎপর কি না। আর এটি হয়ে থাকলে ঐ সংস্কারপন্থিদের তুলনায় অনেক ক্ষতি হবে দলের। কারণ এসব নেতাদের মধ্যে এমন কিছু নেতা রয়েছে যাদের নিয়ে আওয়ামী লীগের মাথা ব্যাথার অবশ্যই কারণ আছে।
সংস্কারপন্থির অভিযোগে দলের পদবঞ্চিত গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের মধ্যে রয়েছেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) জেডএ খান ও মোফাজ্জল করিম, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শাহ মোঃ আবুল হোসাইন, সাবেক হুইপ ও পিরোজপুর জেলার সাবেক সভাপতি সৈয়দ শহীদুল হক জামাল, সাবেক হুইপ রেজাউল বারী ডিনা, দলের সাবেক দফতর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি, সাবেক সাংসদ নজির হোসেন, সাবেক সাংসদ ও চাঁদপুর জেলা সাবেক সভাপতি এসএ সুলতান টিটু ও সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হায়দার খান, সাবেক সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার শহিদুজ্জামান, সাবেক সাংসদ ও দলের বরগুনা জেলার সভাপতি নূরুল ইসলাম মনি, সাবেক সাংসদ শামীম কায়সার লিঙ্কন, বগুড়ার সাবেক দুই সাংসদ ডা. জিয়াউল হক মোল্লা ও জিএম সিরাজ, সাবেক সাংসদ মোশাররফ হোসেন মঙ্গু, বরগুনা জেলা সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ ইলেন ভুট্টো প্রমুখ।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com