জামালগঞ্জ প্রতিনিধি ::
সুনামগঞ্জের ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে পাউবো-ঠিকাদারদের অনিয়ম-দুর্নীতির শেষ নেই। তাদের গাফিলতির জন্যই বার বার বাঁধ ভেঙে ফসলহানির ঘটনা ঘটছে। এ বছর ফসল হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে কৃষক। হাওরের বুকে চলছে হাহাকার। এ অবস্থায় বাঁধ নির্মাণ কাজে সেনাবাহিনীর তদারকির দাবি জানিয়েছেন কৃষক-জনতা। এ ব্যাপারে গতকাল মঙ্গলবার জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রসূন কুমার চক্রবর্তী’র কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা। স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন ইউসুফ আল আজাদ, কৃষক নেতা আব্দুস শহীদ, আব্দুল খালেক, ছবর আলী প্রমুখ।
স্মারকলিপিতে উল্লেখিত দাবিগুলো হল, জামালগঞ্জ উপজেলাকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করা, দুর্নীতিবাজ পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিনিধিদের সহায়তায় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও পিআইসিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা, কৃষকদের কাছে সরকারি ও এনজিও সংস্থার নিকট হতে ঋণসহ সকল ঋণের সুদ মওকুফ করা, অসহায় কৃষকদের জীবন-জীবিকার তাগিদে সুদমুক্ত নতুন ঋণ প্রদান করা, চাল-আটাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে সর্বদা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা। ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভেঙে বাজার মূল্য স্থিতিশীল রাখা, বর্ষা মৌসুমে স্থানীয় কৃষকদের নিয়ে হাওরের বেড়ি বাঁধ ও বাঁধ নির্মাণে পরিকল্পনা প্রণয়ন করা। হাওরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ভরাট হয়ে যাওয়া নদীগুলো খনন করা, প্রত্যেক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় আনা। চলতি বছরে সরকারি খাজনা স্থগিত রাখা, আগামী বছরে হাওরের বাঁধ ও বেড়ি বাঁধ ও নদী খনন প্রকল্প গ্রহণের জন্য স্থানীয় কৃষক প্রতিনিধিদের পরার্মশকে প্রাধান্য দিতে উপজেলা পর্যায়ে গোল টেবিল বৈঠকের আয়োজন করা। প্রতি বছর হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের সময় জবাবদিহিতাসহ টেকসই বাঁধ নির্মাণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তদারকি নিশ্চিত করা। প্রত্যেক বছর হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজে গণমাধ্যম কর্মীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। বন্যাদুর্গত এলাকায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবায় সর্বদা পর্যাপ্ত ঔষধ সরবরাহ করা ও কৃষকের গবাদী পশুর খাবার ও চিকিৎসার সহায়তা করা।
স্মারকলিপি প্রদানের আগে উপজেলা পরিষদের সামনে বিক্ষোভ করেন কৃষকরা। প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, “হাওর বাঁচাও, দেশ বাঁচাও” আন্দোলনের নেতা ইউসুফ আল আজাদ, উপজেলা আ.লীগ সভাপতি মোহাম্মদ আলী, আব্দুল খালেক, ছবর আলী, এম নবী হোসেন, মোবারক আলী তালুকদার, মো. শহিদুল ইসলাম, রজব আলী, আলী আক্কাছ মুরাদ প্রমুখ। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রসূন কুমার চক্রবর্তী বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন। তিনি অসহায় কৃষকদের দাবির প্রতি একাত্মতা পোষণ করে বলেন, কৃষকদের দাবি-দাওয়ার বিষয়টি জেলা প্রশাসকের কাছে পৌঁছে দেয়া হবে। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভেঙে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে মোবাইল কোর্ট চালু করা হবে।