1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ১১:৫৪ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

ফসলহানির প্রভাব বাজারে

  • আপডেট সময় বুধবার, ৫ এপ্রিল, ২০১৭

স্টাফ রিপোর্টার ::
টানা বৃষ্টিপাত আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে কৃষকদের একমাত্র ফসল বোরো তলিয়ে গেছে। আর ফসলহানির এ প্রভাব এখন সুনামগঞ্জের স্থানীয় বাজারগুলোতে পড়তে শুরু করেছে। আকস্মিকভাবে বেড়ে গেছে চালের দাম। বাজারে প্রচুর চালের মজুদ থাকলেও অনেকটাই কৌশলে দাম বাড়িয়েছে অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট। এমন অভিযোগ করেছেন ক্রেতারা। হঠাৎ করেই দাম বেড়ে যাওয়ায় তারা এখন ভোগান্তির শিকার। আর যাদের ‘নুন আনতে পান্তা ফুরায়’ অবস্থা তারা পরেছেন বিপাকে।
কেবল চাল নয়। হঠাৎ করেই দাম বেড়েছে বাজারের খোলা আটার। অনেক ব্যবসায়ী নিজেরাই আটা কিনতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন। এছাড়াও দাম বেড়েছে চিড়ার। গতকাল মঙ্গলবার শহরের পূর্ব বাজার এলাকার চালের দোকান ও ভোগ্য পণ্যের দোকানগুলোতে ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। ক্রেতাদের অভিযোগ সুযোগ বুঝেই অতিরিক্ত মুনাফা আদায় করছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। তবে অনেক ব্যবসায়ীরা বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে চালের মজুদ থাকার পরেও আকস্মিকভাবে দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
চাল ব্যবসায়ীদের দেয়া তথ্যে, বর্তমানে খুচরা বাজারে প্রতি ৫০ কেজি (বস্তার হিসেবে) আতব (২৯) বিক্রি হচ্ছে ২হাজার ৩শ টাকা দরে। এছাড়া আতব (মাঝারি) ২ হাজার ৪শ থেকে ২৫০০টাকা। আতব (২৮) প্রতি বস্তা ২ হাজার ২৫০ থেকে ২৩০০টাকা। পাইজং ২১০০ টাকা। মিনিকেট (সিদ্ধ) ২হাজার ২শ টাকা। জিরাশাইল ২ হাজার ৫শ টাকা দরে প্রতি বস্তা বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের মতে, গত দুইদিনের ব্যবধানে এসব চালের প্রতি বস্তাতে দাম বেড়েছে ৩শ থেকে ৪শ’ টাকা করে।
খোলা বাজারে প্রতি কেজি হিসেবে বিআর (১৯) আতব (পুরাতন) চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৪টাকা দরে। পাশাপাশি মালা (২৮) চাল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৪টাকা, পাইজং (নতুন) প্রতিকেজি ৪২টাকা, মালতি (চিনিগুড়া) প্রতি কেজি ৯৫টাকা, কালিজিরা ৬০, ইরি সিদ্ধ ৩৬, জিরাসাইল ৫০, মালা সিদ্ধ ৪২, মিনিকেট সিদ্ধ ৪৫ ও নাজির শাইল সিদ্ধ প্রতিকেজি ৫০টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
চালের দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। তাদের মতে আচমকা দাম বাড়িয়ে ব্যবসায়ীরা তাদেরকে হয়রানি করছেন। এ ব্যাপারে বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তারা।
ক্রেতা শাহিনুর রহমান বলেন, ‘বাজারে চাল কিনতে এসে বোকা বনে গেছি। সেদিনও দামটা অনেকটাই কম ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই চালের দাম বেড়ে গেছে। চালের দাম বাড়াতে অনেকেই দেখলাম বিষয়টা নিয়ে দোকানদারদের সঙ্গেও কথা কাটাকাটি করছেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন হাওরে ধান নাই, চালের সংকট, এটা তো কেউ মেনে নেবে না’।
ক্রেতা সুবর্ণা বেগম বলেন, ‘পাশের বাসার লোকজন থেকে খবর পেলাম বাজারে চালের দাম শুধু বাড়ছে। পরে চাল না পাওয়ার ভয়ে অনেকেই আমার মতো বাজারে আসছেন। মধ্যবিত্তরা এখনো অফিসের সেলারিই পাননি। আমি আমার পরিবারের কথা চিন্তা করে এবং পরে চালের দাম আরো বাড়বে ভেবে কষ্ট করে হলেও চাল কিনছি। হাওরের ধান পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা চালাকি করেই দামটা বাড়িয়েছে। বিষয়টা প্রশাসনের দেখা উচিত।’
এদিকে, চাল ছাড়াও প্রতি ৫০ কেজি বস্তার হিসেবে খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে ১হাজার ২শ টাকা দরে। গত ১দিন আগেও প্রতি ৫০ কেজি খোলা আটা বিক্রি হয়েছে ১ হাজার টাকায়। গতকাল মঙ্গলবার খুচরা বাজারের ব্যবসায়ীরা আটা কিনতে পারেন নি বলেও অভিযোগ করেছেন। পাশাপাশি প্রতি ৫০ কেজি চিড়া কিনতে হচ্ছে ১ হাজার ৫০টাকায়। যা সোমবার বিক্রি হয়েছে ৮৮০টাকা দরে।
পূর্ব বাজার এলাকার চাল ব্যবসায়ী সজীব বলেন, ‘বাজারে চালের দাম বেড়ে গেছে। আর এ অবস্থায় আমরা জেলা প্রশাসককে প্রস্তাব করেছি যে ওএমএস-এর চাল কম মূল্যে কয়েকজন ডিলার দিয়ে বাজারে ছাড়ার। এতে বাজারের চালের দাম স্থিতিশীল হবে বলেই মনে করি।’
বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সহ সভাপতি আব্দুল লতিফ বলেন, ‘হঠাৎ করেই চালের দামটা বেড়ে যাওয়াতে ক্রেতারা কিছুটা ভোগান্তিতে রয়েছেন। চালের পাশাপাশি চিড়া ও খোলা আটার দাম বেড়েছে। হাওরে ফসলহানির প্রভাবটা বাজারে এখনই পড়তে শুরু করেছে।’
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com