সামছুল ইসলাম সরদার ::
অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে একের পর এক ডুবছে দিরাই উপজেলার হাওরগুলো। ফসল হারিয়ে কাঁদছেন কৃষক। এমন পরিস্থিতে দিরাই অফিসে তালা ঝুলিয়ে উধাও হয়েছেন পাউবো’র কর্মকর্তারা।
অন্যদিকে, চোখভরা জল নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে কৃষকরা হাওরের বাঁধ রক্ষায় প্রাণপণ চেষ্টা করছেন।
গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ শুরু হয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ হওয়ার সরকারি নির্দেশনা থাকলেও ৩১ মার্চ পর্যন্ত ৩০ ভাগ কাজও স¤পন্ন হয়নি। যে কাজটুকু হয়েছে তাও আবার শেষ মুহূর্তে হয়েছে। এর ফলে বৃষ্টির পানিতে বাঁধের মাটি ধসে গেছে। উপজেলা তাড়ল ইউনিয়নের তুফানখালি বাঁধ ভেঙে বরাম হাওরের ৩ হাজার ২শত হেক্টর জমি ও একই ইউনিয়নের ভাটিধল স্লুইচ গেইটের বাঁধ ভেঙে টাংনির হাওরের ১২ শত হেক্টর জমির বোরো ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। চাপতির হাওরের ৪ হাজার ৫ শত হেক্টর জমির অধিকাংশে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
অপরদিকে, করিমপুর ইউনিয়নের চাতল পাড় বেড়ি বাঁধ অতিঝুঁকিপূর্ণ থাকায় এলাকার কৃষকরা বাঁধ রক্ষায় আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও উপজেলার সবকটি বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
দিরাই উপজেলার তাড়ল গ্রামের যুবক মোহাম্মদ আলী জানান, এক সপ্তাহ আগে জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম তুফান খালি বাঁধকে বাঁশ ও চাটাই দিয়ে ভালোভাবে টেকসই করার নির্দেশ দেন। কিন্তু পাউবো ও পিআইসি কমিটি জেলা প্রশাসকের নির্দেশ গ্রাহ্য করেনি। ফলে তুফানখালি বাঁধটি ভেঙে গেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুজ্জামান পাভেল জানান, বাঁধ রক্ষায় আমাদের পক্ষ থেকে বস্তা, বাঁশ দিয়ে যথাসম্ভব সহযোগিতা করা হচ্ছে। চাপতির হাওরের চাতল থেকে কলিয়ার কাপন বাজার পর্যন্ত কম্পার্টমেন্টাল বাঁধে ন্যূনতম কাজও করেনি পিআইসি। এ হাওরের বাঁধগুলোতে ৩৫ ভাগ কাজও করেনি তারা। এখন ফসল রক্ষা করতে কৃষকরা স্বেচ্ছাশ্রমে হাওর রক্ষা বাঁধের কাজ করছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাযায়, বরাম হাওরের ৩ হাজার ২ শত হেক্টর, টানিংর ১২ শত হেক্টর বোরো ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। চাপতির হাওরের ৪ হাজার ৫শত হেক্টর জমির অধিকাংশে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে পাউবো’র কর্মকর্তাদের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।