স্টাফ রিপোর্টার ::
ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে পাউবো ও ঠিকাদারদের অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদে এবং বাঁধ ভেঙে ফসলহানির ঘটনায় সুনামগঞ্জকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি জোরালো হচ্ছে। রোববার দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার আস্তমা এলাকায় মানববন্ধন ও সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়ক অবরোধ করে কৃষক-জনতা সুনামগঞ্জকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি জানিয়েছিলেন। গতকাল সোমবারও সুনামগঞ্জ শহরে মানববন্ধন করে একই দাবি জানিয়েছেন সচেতন হাওরবাসী। মানববন্ধনে বক্তারা হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতিকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
সোমবার সকালে শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এ মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম আর দুর্নীতি হওয়ার কারণে বছরের পর বছর সুনামগঞ্জের লাখ লাখ কৃষকের বছরের একটি মাত্র ফসল পানির নিচে তলিয়ে যায়। হাওরেরর ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের দাবি জানান বক্তারা। সেইসাথে সুনামগঞ্জ জেলাকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি জানানো হয়।
সাংবাদিক বিন্দু তালুকদারের সঞ্চালনায় মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন- কমিউনিস্ট পার্টির জেলা সভাপতি চিত্তরঞ্জন তালুকদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালিক, কৃষক লীগ নেতা করুণাসিন্ধু চৌধুরী বাবুল, ডা. মুর্শেদ আলম, আমরা হাওরবাসীর সমন্বয়ক রুহুল আমিন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান, সাংবাদিক লতিফুর রহমান রাজু, পঙ্কজ কান্তি দে, জেলা উদীচী’র সাধারণ স¤পাদক জাহাঙ্গীর আলম, টিআইবি সনাক সদস্য খলিল রহমান, সুজনের জেলা যুগ্ম সাধারণ স¤পাদক মাসুম হেলাল, সাংবাদিক শামস শামীম, কুলেন্দু শেখর দাস, স্কাউট লিডার বুরহান উদ্দিন, অ্যাডভোকেট শাহীনূর রহমান প্রমুখ।
অন্যদিকে, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলাসহ সুনামগঞ্জকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবিতে সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। বিশ্বম্ভরপুর সদরে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে কৃষকের ক্ষতিপূরণএবং পাউবো-ঠিকাদারদের শাস্তি দাবি জানানো হয়।
সোমবার বিকেলে উপজেলার ‘হাওর বাঁচাও, কৃষক বাঁচাও’ আন্দোলনের ব্যানারে উপজেলা সদরে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, পিআইসি, ঠিকাদারসহ সংশ্লিষ্টদের অবহেলায় খরচার হাওর, আঙ্গারুলি হাওর, সোনাতলা হাওরসহ বিভিন্ন হাওর-বাঁওরের বাঁধ ভেঙে বোরো ফসল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। তাই এই অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অকার্যকর প্রতিষ্ঠান ঘোষণা করতে হবে। ভবিষ্যতে এলজিইডি’র মাধ্যমে হাওর রক্ষা বাঁধ বাস্তবায়ন করতে হবে। এতে করে স্থানীয়ভাবে এদের খুঁজে পাওয়া যাবে।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন হাওর বাঁচাও কৃষক বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি মহিবুর রহমান তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক হাসান বশির, পলাশ ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ূম মাস্টার, হাওর বাঁচাও সংগঠনের সহ-সভাপতি অলিমান তালুকদার, নুরুল আলম সিদ্দিকী, মোশারফ হোসেন ইমন, হুমায়ুন কবির পাপন প্রমুখ।