স্টাফ রিপোর্টার ::
প্রতি বছরের চিত্র বদলায়নি। বরাবরের মতোই হাওরে হাওরে এখন কৃষকের কান্নার রোল। আর গত বছরের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই এবছরও বোরো ধান বাঁধ ভেঙে পানিতে তলিয়ে গেছে। সর্বস্ব হারিয়ে কৃষক বিক্ষুব্ধ। আর এবার পাউবো’র দুর্নীতি এবং ঠিকাদারদের গাফিলতিকে দায়ি করে তারা নেমে এসেছেন সড়কে। রোববার দেখার হাওরের বোরো ধান পানিতে তলিয়ে যাওয়ার পর বিকেলে বিক্ষুব্ধ কৃষক-জনতা দুর্নীতিবাজদের বিচার দাবি করে বিক্ষোভ করেন তারা। পাশাপাশি তারা সুনামগঞ্জকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি জানান।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জের আস্তমা এলাকায় বিকেল ৩টা থেকে প্রায় ২ঘণ্টাব্যাপী তারা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এসময় তারা মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচিও পালন করেন। সেখানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে উপস্থিত হন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. শফিউল আলম, সহকারি পুলিশ সুপার সঞ্জয় সরকারসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। কৃষকরা এসময় অনেকেই চিৎকার করে কাঁদতে থাকেন। তাদের হাহাকারে ভারি হয়ে ওঠে গোটা এলাকার পরিবেশ। তারা একবাক্যে সকলেই সরকারের কাছে পাউবো ও ঠিকাদারদের বিচার চাইতে থাকেন। তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে দুর্নীতিবাজ ঠিকাদারদের বিচার না হলে আন্দোলন থেকে ঘরে ফিরে যাবেন না বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। এসময় সড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সড়কে অবস্থান নেন কয়েক’শ কৃষক। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঠিকাদারদের কাজের গাফিলতির বিষয়টি তদন্ত ও প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাসে সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেন বিক্ষুব্ধ কৃষক-জনতা।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এসময় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ন্যায্য দাবির প্রেক্ষিতে দেখার হাওরের আসামপুর অংশে স্লুইস গেইট নির্মাণ, সুনামগঞ্জ জেলাকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা, নদী খননের ব্যবস্থা ও যে সকল ঠিকাদার এবং পিআইসি বাঁধ নির্মাণে অনিয়মের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, তদন্ত কমিটি গঠনসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের যে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করেন।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার ওসি আল আমিন বলেন, কৃষকরা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। কৃষকরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করেছেন। আমরা তাদের বুঝিয়ে বললে তারা সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করেন।