1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ১১:১০ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

সবাইকে বাঁচাতে গিয়েই বিস্ফোরণে ছিটকে পড়েন আজাদ

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৩১ মার্চ, ২০১৭

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
প্রথম বিস্ফোরণের পর রাস্তার পাশে ফেলা ছিল একটি ব্যাগ। তা দেখতে পেয়ে কৌতুহল পেয়ে বসে এক পুলিশ পরিদর্শকের। তিনি বাঁশের লাঠি দিয়ে পলিথিনের ব্যাগটি খোঁচাতে থাকেন। ব্যাগ থেকে বেরিয়ে আসে সবজি-লালশাক ইত্যাদি। তা দেখে দূর থেকে ‘থামো, থামো, কী করো?’ বলতে বলতে ছুটে আসেন র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ানের (র‌্যাব) গোয়েন্দা শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুল কালাম আজাদ। ছুটে আসেন উপ-পরিচালক মেজর শাহীন আজাদও।
তাদের সঙ্গে সঙ্গে ছুটে আসেন পুলিশের পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম ও আবু কয়ছরও। এসেই তারা ব্যাগে থাকা বোমা-সদৃশ বস্তুটি নিষ্ক্রিয় করার কৌশল খুঁজছিলেন। কিন্তু একেবারেই সময় পেলেন না। বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হলো সেটি। ছিটকে পড়লেন লে. ক. আজাদ, মেজর আজাদ, পুলিশ পরিদর্শক মনিরুল ও কয়সর।
সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানাধীন শিববাড়ি এলাকায় ‘আতিয়া মহলে’ জঙ্গিবিরোধী অভিযানের সময় গত ২৫ মার্চ রাতের ওই বিস্ফোরণে লে. কর্নেল আজাদ আর মেজর আজাদ ছাড়া বাকি দুই বীর কর্মকর্তাই ঢলে পড়েন মৃত্যুর কোলে। মারা যান আরও চারজন। সবশেষে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে শুক্রবার (৩০ মার্চ) রাতে চিরবিদায় নিলেন লে. কর্নেল আজাদও।
বিস্ফোরণস্থলে উপস্থিত র‌্যাব, পুলিশ, সিআরটি, সিটি, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন গণমাধ্যমকর্মীরা।
তারা বলেন, যে স্থানে লে. কর্নেল আজাদ ছিলেন, সেখানে থাকলে তিনি হয়তো আঘাত পেতেন না। কিন্তু উপস্থিত সবার নিরাপত্তার কথা ভেবে এবং লাঠি দিয়ে ওই বোমার ব্যাগটি খোঁচাতে থাকা পুলিশ সদস্যের জীবন বাঁচাতেই তিনি ছুটে যান। তার সঙ্গে ছোটেন মেজর আজাদও। সেখানে তারা যাওয়ার পর বোমাটি নিষ্ক্রিয় করতে লেগে যান ইন্সপেক্টর মনিরুল ও কয়ছর। কিন্তু কেন যেন বিপদ আঁচ করতে পারছিলেন লে. কর্নেল আজাদ। তিনি তাদের তখনই থামতে বলেন।
কিন্তু ওই দুই কর্মকর্তা লে. কর্নেল আজাদকে ‘অভয়’ দিয়ে নিষ্ক্রিয় করতে যান। এমনকি মনিরুল র‌্যাবের গোয়েন্দা প্রধানকে এ-ও বলেন, তিনি বোমা নিষ্ক্রিয় করার ওপর আমেরিকা থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন। তাই কিছু ঘটার আশঙ্কা নেই। কিন্তু দুর্ঘটনা ঘটেই গেল। দুই দফা বিস্ফোরণে মনিরুল ও কয়ছরসহ সেদিন প্রাণ হারান ছয়জন। আহত হন মেজর আজাদসহ কয়েকডজন মানুষ।
সেদিন গুরুতর লে. কর্নেল আজাদকে প্রথমে সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। রাতেই ওই হাসপাতালে তার মাথায় বেশ কয়েকটি অস্ত্রোপচার হয়। পরে হেলিকপ্টারে ঢাকা পাঠিয়ে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অবস্থার উন্নতি না হলে ২৬ মার্চ (রোববার) তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ওই হাসপাতালে তাকে লাইফ সাপোর্টে দেওয়া হয়। ২৯ মার্চ আবুল কালাম আজাদকে লাইফ সাপোর্টে রাখা অবস্থায়ই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে দেশে পাঠানো হয়। দেশে এনে ফের সিএমএইচ-এ নেওয়া হয় তাকে।
কিন্তু একদিন পর বৃহ¯পতিবার দিনগত রাতে ১২টা ৫ মিনিটে চিকিৎসকরা আবুল কালাম আজাদকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিস্ফোরণের দিন আতিয়া মহলে অভিযানের বিষয়ে প্রেস ব্রিফিং শেষে একে একে ফিরছিলেন সাংবাদিকরা। সাংবাদিকরা যখন গোটাটিকর মাদরাসা অতিক্রম করে সিলেট ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কে আসছিল। এমন সময় মূল সড়ক সংলগ্ন আতিয়া মহলে যাওয়ার বিকল্প রাস্তাটির সম্মুখে বোমা বিস্ফোরণ ঘটে।
স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, জঙ্গিরা সবজি-লালশাকের মোড়কে ব্যাগে করে এখানে এনে বোমা রেখে যায়। এরপরই ঘটে বিস্ফোরণ।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com