বিশেষ প্রতিনিধি ::
সুনামগঞ্জ-২ আসনে উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমানের গ্রামের কেন্দ্রে ভরাডুবি হয়েছে নৌকার। অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রধান সমর্থক জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক নাছির উদ্দিন চৌধুরী’র গ্রামের কেন্দ্রে স্বাধীনতার পর প্রথম বারের মতো বিজয়ী হয়েছে নৌকা। দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর কেন্দ্রে এই জয়-পরাজয় নিয়ে সাধারণ ভোটাররা টিকা-টিপ্পনী কাটলেও দুই দলের তৃণমূল কর্মীরা হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
জানা গেছে, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমানের বাড়ি উপজেলার নাচনি চন্ডিপুর গ্রামে। এই গ্রামের কেন্দ্র হচ্ছে ধনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই কেন্দ্রে ড. জয়া সেনগুপ্তা নৌকা প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ৭৩৬ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছায়েদ আলী মাহবুব হোসেন সিংহ প্রতীক নিয়ে ৯৩৩ ভোট পেয়ে এই কেন্দ্রে বিজয়ী হয়েছেন। অপরদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছায়েদ আলী মাহবুব হোসেনকে নির্বাচনে আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থনকারী জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক নাছির উদ্দিন চৌধুরী নিজ কেন্দ্র কুলঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে স্বাধীনতার পর এই প্রথম বারের মতো নৌকা প্রতীক বিজয়ী হয়েছে। এই কেন্দ্রে ড. জয়া সেনগুপ্তা ৪৯৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। এই কেন্দ্রে ছায়েদ আলী মাহবুব হোসেন ৩৯১ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন। এছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির আত্মীয় বেষ্টিত গ্রাম কার্তিকপুর মাদ্রাসা কেন্দ্রে বিপুল ভোটে পরাজিত হয়েছে নৌকা। এই কেন্দ্রে ১২০০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ছায়েদ আলী মাহবুব হোসেন। এই কেন্দ্রে মাত্র ৩৩৪ ভোট পেয়েছে নৌকা।
উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমান এই আসনে দলীয় কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। কিন্তু তার বদলে তৃণমূল আওয়ামী লীগের সমর্থনে সুরঞ্জিত পত্নী ড. জয়া সেনগুপ্তাকে দলীয় মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে কাজ করছেন এই অভিযোগ সিলেটে তৃণমূল প্রতিনিধি সম্মেলনে কৌশলে বক্তব্যে বলেছিলেন দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি প্রদীপ রায়। তবে মতিউর রহমান সংবাদ সম্মেলন করে দলীয় প্রার্থীর বিরোধিতার বিষয়টি অস্বীকার করেছিলেন।
দিরাই উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক রঞ্জন রায় বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির নিজ কেন্দ্র এবং তার আত্মীয় বেষ্টিত কেন্দ্রে নৌকা বিপুল ভোটে পরাজিত হওয়ায় আমরা ক্ষুব্ধ। শুধু তার নিজ কেন্দ্রই নয় তার আত্মীয় বেষ্টিত গ্রাম কার্তিকপুরেও বিপুল ভোটে নৌকা পরাজিত হয়েছে। এই পরাজয় থেকেই স্পষ্ট হচ্ছে নির্বাচনে তার অবস্থান। আমরা কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগকে বিষয়টি খতিয়ে দেখে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক নাছির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, কুলঞ্জ কেন্দ্র আমার নিজের কেন্দ্র। এই কেন্দ্রে কখনো নৌকা পাস করতে পারেনি। তবে এবার গ্রামের মাসুক মেম্বার মামলা থেকে বাঁচতে গ্রামবাসীকে বুঝিয়ে নৌকাকে জিতিয়ে দিয়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমানের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন ধরেননি।