ধর্মপাশা প্রতিনিধি ::
টানা ভারি বর্ষণ ও ঢলের পানিতে ফসলরক্ষা বাঁধ ভেঙে ধর্মপাশা উপজেলায় ১৫টি হাওরের ২হাজার ৮৮০ হেক্টর বোরো ফসল তলিয়ে গেছে। ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ যথাসময়ে সম্পন্ন না হওয়ায় এবং কাজে দুর্নীতি করায় বাঁধ ভেঙে ফসল ডুবির ঘটনা ঘটেছে বলে কৃষকরা অভিযোগ করেছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় ও স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের চন্দ্র সোনার থাল হাওরের আওতায় মারারদারিয়ার বাঁধ ভেঙে ৩০০ হেক্টর, একই হাওরের ডুবাইল বাঁধ ভেঙে ২০০ হেক্টর, চামরদানি ইউনিয়নের গুরমা হাওরের আওতায় গুরমার বাঁধ ভেঙে ৬০০ হেক্টর ও একই হাওরের আওতায় পাশুয়া বাঁধ ভেঙে ৩৫০ হেক্টর বোরো জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।
পানির প্রবল স্রোতে মধ্যনগর ইউনিয়নের স্থানীয় মেঘনার বাঁধ ভেঙে ৩০ হেক্টর বোরো জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়াও গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে এ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের আরও ১৫টি হাওরের ১৪০০ হেক্টর বোরো জমির ফসল বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে।
স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো’র) কর্মকর্তাদের গাফিলতি ও সংশ্লিষ্ট বাঁধের পিআইসি কমিটির সভাপতিদের উদাসীনতায় এই বাঁধ দু’টি ভেঙে হাওরে পানি ঢুকে এখানকার বোরো ফসলের ক্ষতি হয়েছে। বাঁধের পুরো কাজ বাস্তবায়ন না করার কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে। পাউবো ও পিআইসি কমিটির লোকজন কাজ না করে এই বাঁধগুলো থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। দুর্নীতির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ফসলের ক্ষতিপূরণ দাবি জানান কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শোয়েব আহমদ বলেন, ‘এই উপজেলার কৃষকেরা বোরো ফসলের উপর নির্ভরশীল। ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ যথাসময়ে সম্পন্ন না হওয়ায় ফসল ডুবির ঘটনা ঘটেছে। এ উপজেলার বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে ১৪৮০ হেক্টর বোরো জমি ও জলাবদ্ধতায় আরও ১৪০০ হেক্টর বোরো জমির ফসল তলিয়ে গেছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মামুন খন্দকার বলেন, ‘নতুন করে আর যাতে ফসলডুবির ঘটনা না ঘটে সে জন্য শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত আমি এ উপজেলার বেশ কয়েকটি বাঁধ পরিদর্শন করেছি। এ নিয়ে পাউবোর কর্মকর্তার সঙ্গে আমি কথা বলেছি। এছাড়া সংশ্লিষ্ট পিআইসি কমিটির সভাপতিদের দ্রুত বাঁধের কাজ সম্পন্ন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রঞ্জন কুমার দাস বলেন, ‘পাউবো’র লোকজনদের ও পিআইসি কমিটির ফসলরক্ষা বাঁধের কাজে কোনো গাফিলতি ছিল না। তবে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় এবং নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায় পানির প্রবল ¯্রােতে বাঁধ ভেঙে হাওরে পানি ঢুকেছে।’