জামালগঞ্জ প্রতিনিধি ::
টানা বর্ষণে জামালগঞ্জের হালির ও পাগনার হাওরের ১ হাজার হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে হালির হাওরে কচমা, সুন্দরপুর, কেচকিমারা, আলীপুর, ছাতিধরাসহ বিভিন্ন হাওরের ৪০০ হেক্টর ও পাগনার হাওরের মধ্যে পাগনা, গজারিয়া, বিনাজুরা, মল্লিকপুর, চাগাইয়া, চাওডা, মিনি পাগনা ছোট হাওরগুলির ৫০০ হেক্টর ফসল, ছানুয়া ও ডাকুয়া হাওরের ১০০ হেক্টর ফসল তলিয়ে গেছে।
সাড়ে সাত হাজার বিঘা জমিতে প্রায় ৪১৬৬ মেট্রিক টন ধানের বাজার মূল্য প্রায় কোটি টাকা। পাগনার হাওরে ৪৭ বছর যাবত কানাইখালী নদী ও গজারিয়া স্লুইস গেইট এলাকা খনন না করায় দেড় হাজার হেক্টর জমির ফসল অনাবাদি রয়েছে। সম্প্রতি টানা বর্ষণে উপজেলায় পাউবো’র ১৯টি অসমাপ্ত ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড, পিআইসি ও ঠিকাদার কমিটির অবহেলায় ২৮ ফেব্রুয়ারি বাঁধ নির্মাণ কাজের নির্দিষ্ট সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও এখনো কাজ সম্পন্ন হয়নি। ফলে হালির হাওরের কালীবাড়ির খাল, আছানপুর ও হরিপুরের মধ্যবর্তী বেড়িবাঁধ, সুচিয়া হইতে কেচকিমারা খাল, হেরারকান্দি বাঁধ, হাওরিয়া আলীপুর হইতে রাঙিয়া নদী বেড়িবাঁধ, ঝালখালি বাঁধসহ ১৩টি ও পাগনার হাওরের বগলাখালী, মতিরঢালা, কামধরপুরের খাল, মড়লপুরের ঢালা, ফুলিয়া টানা খাল (দিরাই থানাধীন) পিআইসি, পিটালিয়া বাঁধ, কুরালিয়া খাল রয়েছে অরক্ষিত। বাঁধগুলির মধ্যে বাঁশ ও বস্তা পুঁতে না দেওয়ায় অকাল বন্যায় ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা করছে কৃষকেরা।
উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও হাওর বাঁচাও, দেশ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি ইউসুফ আল আজাদ বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রতিনিধিরা পিআইসিদের যোগসাজশে কাজ বিলম্ব ও দুর্নীতি করে কৃষক নিধনের পাঁয়তারা করছে। অতিসত্তর বাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ না করলে কৃষকরা সংশ্লিষ্ট পিআইসি ও ঠিকাদারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা করতে বাধ্য হবো।’
পিআইসি প্রতিনিধি ফেনারবাঁক ইউপি চেয়ারম্যান করুণাসিন্ধু তালুকদার বলেন, ‘কাজ প্রায় সম্পন্ন করেছি, কিন্তু অর্থ পাই নাই।’
বেহেলী ইউপি চেয়ারম্যান অসীম তালুকদার বলেন, ‘সময় মতো পর্যাপ্ত অর্থ না পাওয়ায় কাজ সম্পন্ন করতে বিলম্ব হচ্ছে।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাফায়েত আহমদ সিদ্দিকী বলেন, ‘ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকলে ক্ষতির পরিমাণ আরো বৃদ্ধি পেতে পারে। ফসল রক্ষা বাঁধগুলোও ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। এ বছর আবহাওয়া ফসলের প্রতিকূলে রয়েছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রসূন কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘আমরা পিআইসিদের সতর্ক করে দিয়েছি অতিসত্তর বাঁধ ও বেড়ি বাঁধ নির্মাণ করার জন্য। আমরাও তীক্ষè দৃষ্টি রাখছি।’