1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৮:০২ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করুন

  • আপডেট সময় শনিবার, ৪ মার্চ, ২০১৭

মিহির রঞ্জন তালুকদার :
বাংলাদেশের কৃষি ব্যবস্থা পুরোপুরিই প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল। সেচের প্রয়োজনে যেমন বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে থাকতে হয় আবার তেমনি অতিবৃষ্টি, খড়া, শিলাবৃষ্টি ইত্যাদি কারণে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
আগামী ১৫ মার্চ পর্যন্ত বোরো আবাদের সময় রয়েছে। এবছর সিলেটে ১৭ লাখ ৮২ হাজার ১শ টন চাল উৎপাদন হওয়ার কথা। যার আর্থিক মূল্য প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। কিন্তু সিলেট পাহাড়ি অঞ্চল বিধায় প্রতি মৌসুমে এসব ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। বেশি ক্ষতি হয় হাওর অঞ্চল সুনামগঞ্জে।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি তারিখ গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, প্রতি বছরই এসব এলাকায় ফসল রক্ষা বাঁধ বা বেড়ি বাঁধ দেওয়া হয়। এবছরও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) আগাম বন্যা ও পাহাড়ি ঢল থেকে ফসল রক্ষার জন্য হাওড়ে বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। নির্ধারিত সময়ের প্রায় দুই মাস পর সুনামগঞ্জের হাওরগুলোর ভাঙ্গা ক্লোজার সংস্কার ও বাঁধ উঁচুকরণের কাজ শুরু হয়েছে। বর্ষা নামার আগে বাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ হবে কিনা তা নিয়ে কৃষকদের মনে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তারা বলেছেন দ্রুত কাজ শেষ না হলে হঠাৎ করে পাহাড়ি ঢলে ফসল তলিয়ে যাবে সোনার ফসল। কৃষকদের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা তাই বলে।
চলতি বোরো মৌসুমে সুনামগঞ্জের ৩৭টি বড় হাওরসহ মোট ৪২টি হাওরের ২২৫টি পিআইসি (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) এবং ৪৮টি প্যাকেজে ঠিকাদারদের মাধ্যমে বাঁধ নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করবে পাউবো। এবারের মোট বরাদ্দ পিআইসিতে ১০ কোটি ৭২ লাখ টাকা এবং দরপত্রের মাধ্যমে কাজ করার জন্য ৪০ কোটি টাকা। নিয়ম অনুযায়ী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শুরু করে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু ফেব্রুয়ারি শেষ হয়ে গেলেও বাঁধের কাজ এখনও শেষ হয়নি।
পাউবোর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে পিআইসিদের অনুকূলে অর্থ ছাড় হয়েছে। অধিকাংশ বাঁধের কাজ শুরু এবং কোনো কোনো স্থানের পিআইসিদের কাজ শুরু করতে তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
এলাকাবাসীর দেয়া তথ্য মতে, ফেব্রুয়ারি মাস পার হলেও অনেক জায়গায় পিআইসির কাজ শুরু হয়নি এমনকি ঠিকাদারদেরও দেখা মিলেনি। তবে কয়েকটি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে।
একটা গল্প প্রচলিত আছে ‘একবার এক গ্রামে এক সরকারি কর্মকর্তা পুকুর তৈরির জন্য আবেদন করল। তাকে অর্থ বরাদ্দ দেয়া হল। কিন্তু পুকুর আর তৈরি হয়নি। পুরো টাকাটাই তার পকেটে গেল। যখন তার বদলির সময় এলো, তখন তো তিনি খুব বিপদে পড়লেন। কাগজে-কলমে এখানে একটা পুকুর আছে। নতুন কর্মকর্তাকে তিনি কি বুঝাবেন! তখন তিনি পুকুর ভরাটের একটি আবেদন করলেন। আমাদের গ্রামের পুকুরটা একদম ডোবা হয়ে গেছে। এখান থেকে রোগজীবাণু ছড়াচ্ছে, এর কারণে মশা-মাছির উৎপাত বেড়ে যাচ্ছে।” তখন তাকে পুকুর ভরাটের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেয়া হল। বলা বাহুল্য, এই টাকাও তার পকেটে গেল। আর নতুন কর্মকর্তা আসার পর তাকে তিনি বুঝিয়ে দিচ্ছেন : “এই যে ডকুমেন্ট, এখানে একটা পুকুর ছিল, আর এই যে ডকুমেন্ট, এই পুকুরটা ভরাট করা হয়েছে।”
ফসল রক্ষাবাঁধের অবস্থাও আংশিক নয় পুরোপুরি এরকম অবস্থা এবং তা দেখে আসছি জন্ম অবধি। ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ শুরু করা হয় এমন এক সময় যখন বর্ষা প্রায় দুয়ারে চলে আসে। ফলে বাঁধ শেষ করার আগে পানি এসে গেলে আর কোনো কাজ করা লাগে না। টাকা ওই পকেটেই থাকে। আবার যদিও দুয়েক জায়গায় কাজ সমাপ্ত হয় কিন্তু মাটি শক্ত না হওয়াতে এটার অবস্থাও একই যেই লাউ সেই কদু! ফলে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ প্রতি বছরই ওই এক জায়গাতেই ঘুরপাক খায়। ফলে এই প্রকল্প না ফসল রক্ষা করতে পারে, না পরবর্তী বছর কাজে লাগে। প্রতি বছরই নতুন কাজ আসে, প্রতি বছরই ফসলও পানিতে ভেসে যায়।
দিরাই উপজেলার একবারে শেষ প্রান্তে আমার জন্মভিটা। তাই এখানকার সমস্যা সম্পর্কে আমি ছোটবেলা থেকেই অবগত। বিগত কয়েক বছর যাবৎ এখানকার অধিকাংশ ফসল পানিতে তলিয়ে যায় ফলে কৃষক ফসল ফলানোর প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। কাজেই এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান হওয়া জরুরি। প্রতি বছরই কোটি কোটি টাকা খরচ হয় এই বাঁধ নির্মাণ বা সংস্কারের কাজে। কিন্তু এসকল এলাকায় যে নদীগুলো বয়ে গেছে তা নাব্যতা হারিয়ে ফেলছে। ছোটবেলা দেখতাম সারা বছরই এসব নদীতে নৌকা চলত কিন্তু এখন আর চলে না। এসব নদীর নাব্যতা বৃদ্ধি না করলে কৃষি ব্যবস্থা পরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাবে। দেশকে সমৃদ্ধশালী করতে হলে কৃষিকে বাঁচাতে হবে। নদীগুলো খনন করার ব্যবস্থা করতে হবে।
তাহলে হয়তো আশু সমস্যার সমাধান হবে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com